আইলহাঁস-নাগদাহ ইউপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ১৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী

আলমডাঙ্গায় আসন্ন দু’টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে অংশ নিতে সব দলই নিজেদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ তাদের ‘নৌকা’ প্রতীক এবং বিএনপি ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ না নিলেও নিবন্ধন হারানো জামায়াত স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।

উপজেলার আইলহাঁস ও নাগদাহ এ দু’টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ১৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ভোটযুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচনে নতুন মুখ মিলছে প্রার্থীতায়। সব রাজনৈতিক দলগুলো এবারের নির্বাচনে অংশ গ্রহন করায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটের আভাস মিলেছে।

আগামি ১৬ই মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নাগদাহ ও আইলহাঁস ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে ঘিরে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে চা দোকান থেকে শুরু করে প্রতিটি অলি-গলিতে চলছে নানা আলোচনা-পর্যালোচনা। শুরু হয়েছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের গণসংযোগ। এলাকায় এলাকায় দৌড়ঝাঁপ। সম্ভাব্য প্রার্থীর ছবিসহ ‘দোয়া প্রার্থী’ লেখা পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে প্রতিটি গ্রাম ও মহল্লার অলি-গলি। প্রার্থীরা বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন।  উঠান বৈঠক করছেন। মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন। দোয়া ও সমর্থন চাচ্ছেন। দলের সমর্থন পেতে তৃণমূলের নেতাকর্মীদেরও টানছেন নিজের পক্ষে। চলছেন সুসম্পর্ক বজায় রেখে।

যদিও এখনো ঠিক হয়নি কোন প্রক্রিয়ায় প্রার্থী মনোনয়ন দেবে রাজনৈতিক দলগুলো। তবে প্রার্থীরা ধারণা করছেন, বরাবরের মতো এবারো দলের তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে প্রার্থী চুড়ান্ত করবে দলীয় মনোনয়ন বোর্ড।

কেউ কেউ আবার স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। তারা ভাবছেন স্থানীয় সাংসদ যাকে সমর্থন দেবেন তৃণমূলের মতামত তাদের পক্ষেই যাবে। সে জন্য সারাক্ষণ সাংসদদের আশপাশেই থাকছেন তারা। সাংসদের প্রতিটি কর্মসূচিতেই সরব উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের।

নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে ১০ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী অংশ নিচ্ছে। প্রার্থীরা হলো- নাগদাহ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হায়াত আলী (নৌকা) প্রতিকে নির্বাচন করতে লবিং শুরু করেছে। তবে থেমে নেই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা বিপুল জোয়াদ্দার। তিনি বর্তমান সাংসদ সদস্য এমপি সোলায়মান হক জোয়াদ্দারের মামাতো ভাই।

আইলহাঁস ইউনিয়ন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী। তারা হলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বাদল, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজের প্রভাষক হাসিবুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম লাটিম, সাবেক মেম্বার মুহাম্মদ, আফিজ উদ্দিন বিশ্বাস, বিল্লাল গণি, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা রাসেল, ব্যবসায়ী কাশেম।
এছাড়াও নাগদাহ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও ক্রিয়া সংগঠনক প্রভাষক আবুল হাসনাত দলীয় মনোনয়নের জন্য বিভিন্ন ভাবে লবিং করছে। ইতিপূর্বে তিনি করোনাকালীন সময়ে স্থানীয় যুবকদের সহযোগীতায় সাধারণ মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে।

উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক বজলুও নির্বাচনি প্রচারণায় পিছিয়ে নেই। সাবেক ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মকলেছুর রহমান কমল নির্বাচন নিয়ে চুপিসারে থাকলেও নিবন্ধন হারানো জামায়াতের সভাপতি দারুস সালাম নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছে। ইউনিয়ন বিএনপির যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রাসেল তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিকট ভোট চাইতে ব্যস্ততার মধ্যে পার করছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চুপিসারে এগিয়ে চলেছে বর্তমান নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও আতিকুল ইসলাম আতিক।

এদিকে আইলহাঁস ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম লাটিম সম্ভব্য (নৌকা) প্রতিক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে থাকতে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। জনসমর্থনে পিছিয়ে পড়লেও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বাদল নির্বাচনের মাঠ নিজের পক্ষ্যে সমর্থন গুছাতে মরিয়া হয়ে পড়েছে। তবে সরোজগঞ্জ থেকে ভোট পরিবর্তন করে আইলহাঁস নির্বাচনে ভোট অংশ নিতে যাচ্ছে আবুল কাশেম।

সর্বশেষ নাগদাহ ও আইলহাঁস ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালে ২৯ শে মার্চ। ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বের শেষ মুহুর্তে আগামি ১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন।

নাগদাহ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হায়াত আলী জানান, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচন পূর্ব মুহুর্তে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে বিজয় লাভের তিনি আশ্বাস দেন। এদিকে বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিগত ৫ বছরের মত সাধারণ মানুষ তাকে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করবে এটাই আশাবাদী।ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিশরও মনোনয়ন পেতে চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে জামায়াত নেতা দারুস সালাম তার ইতোপূর্বের ভেঙে পড়া সংগঠনকে শক্তিশালী করে সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে বদ্ধপরিকর বলে দাবি করেন।

আইলহাঁস ইউনিয়নে যুবলীগ নেতা আব্দুল হালিম লাটিমও নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে থাকতে চায়। নিজের ভোট পরিবর্তনের মাধ্যমে আবুল কাশেম আইলহাঁস নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়াই করতে চায়।