
আজ চুয়াডাঙ্গা জেলায় স্থানীয় শহীদ দিবস। দিনটি উযাপন উপলক্ষে দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে আজ সকাল ৮টায় পাকবাহিনীর হাতে নিহত ৮জন মুক্তিযোদ্ধার সৃস্মিস্তম্ভে পুস্পমাল্য অর্পন, জাতীয় ও মুক্তিযোদ্ধা পতাকা উত্তোলন ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছেন।
১৯৭১ সালের ৫ আগষ্ট চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার মধ্যবর্তী স্থান রতনপুর ও বাগোয়ান গ্রামের মাঝামাঝি মাঠে পাক-হানাদার বাহিনীর সাথে সমর সম্মুখ যুদ্ধে ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন। এ যুদ্ধে ৭জন প্রাণে বেঁচে যায় ৮জন বীর মুক্তিযোদ্ধা নিহত হয়।
পাক হানাদার বাহীনির সাথে সমর সম্মুখ এ যুদ্ধে পাক-বাহিনীর ব্রাস ফায়ার ৮জন নিহত হয়। নিহতরা হলেন,শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান জামান, আবুল কাশেম, রবিউল ইসলাম, কিয়ামুদ্দিন, আফাজ উদ্দিন, আলাউল ইসলাম খোকন, রওশন আলম, খালেদ সাইফুদ্দিন ও আহম্মেদ তারেক।
যুদ্ধে নিহত ৮জনের লাশ দামুড়হুদা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে কিতাব হালদারের জমিতে চাপা মাটি দেয় পাক-হানাদার বাহিনী। এরপর ১৯৯৮ সালে ৮কবর স্মৃতিস্তম্ভ নিমার্ন করা হয়। এরা পর থেকে আট কবর নামে এ স্থানটি পরিচিতি লাভ করে। আটকবর স্মৃতিস্তম্ভে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও জাতীয় পতাকা,মুক্তিযোদ্ধা পতাকা ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে বলেন জানান দামুড়হুদা উপজেলা নিবার্হী অফিসার তীথি মিত্র।
উল্লেখ্য ১৯৭১ সালের ৫ আগস্ট বাগোয়ান গ্রামের রাজাকার কুবাদ আলী ও তার সহযোগিরা ভারতের ভাতগাছী ও ব্রম্মনগর সীমান্তে অবস্থানকারী মুক্তিযোদ্ধাদের মিথ্যা সংবাদে দেয় পাকবাহীনি রতনপুর ও বাগোয়ান মাঠের ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে রাজাকাররা।
এ খবর পেয়ে ১৫জন মুক্তিযোদ্ধা তাদের অস্ত্র ও গোলা বারুদ নিয়ে বিকাল ৩টার দিকে রওনা ৪টার দিকে বাগোয়ান ও রতনপুর মাঠে পৌঁছায়। এদিকে আগে থেকে রাজাকার কুবাদ আলী ও তার সহযোগীদের প্লান অনুযায়ী নাটুদহ ক্যাম্পের পাক হানাদান বাহিনী ইংরাজী ইউ (ট) আকৃতিতে আবস্থান বা ওৎ পেতে ছিলো।
এ সময় ১৫জন মুক্তিযোদ্ধা রতনপুর ও বাগোয়ান মাঠে পৌছালে। মুক্তিযোদ্ধারা কিছু বুঝে ঊঠার আগে ওৎ পেতে থাকা পাকবাহিনী তিন দিক থেকে বৃষ্টিরমত গুলি বর্ষণ শুরু করে। মুক্তিবাহিনীও পাল্টা গুলি বর্ষণ করে। উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলাগুলির এক পযার্য় মুক্তি বাহিনীর গুলা বারুদ শেষ হয়ে যায়।
এর মধ্যে ৭জন মুক্তিযোদ্ধা পিছু হটে প্রাণে বেঁচে গেলেও বাকি ৮জন মুক্তিযোদ্ধা ঘটনাস্থলে নিহত হয়। যরে যুদ্ধ শেষে পাক-বাহিনী ৮জন মুক্তিযোদ্ধার লাশ গুরুর গাড়িতে করে নিয়ে নাটুদহের জগন্নাথপুর গ্রামের নিকট মাঠে একটি গর্ত করে মাটি চাপা দিয়ে দেয়। স্থানীয় লোকজন নিহত মুক্তিযোদ্ধাদের যানাজা করতে চাইলে পাক-হানসাদার বাহিনী তাদের যানাজা করতে দেয়নি। গণকবর দেওয়া সেই ৮জন মুক্তিযোদ্ধার কবরটি ৮ কবর নাম পরিচিতি পায়।
১৯৯৮ সালে ৬৬ শতক জমির উপর তৎকালিন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিক একাট স্মৃতিস্তম্ভ নিমার্ন করে দেন। এবং বর্তমান সরকারের চুয়াডাঙ্গা-০১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান হক জোয়াদ্দার নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি যাদু ঘর নিমার্ন করে দিয়েছেন।
এ আট কবরটি ৩৩ শতক জমির উপর বিভিন্ন প্রজাতির ১১২টি গাছের ছায়া দিয়ে ঘিরে আছে আট কবর সৃস্মি স্তম্ভটি।