
আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সরকারি অনুমোদন ও বৈধ লাইসেন্স ছাড়া ‘সান এগ্রো ফার্ম’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান নকল জৈব সার ও কম্পোস্ট উৎপাদন ও বাজারজাত করার অভিযোগ। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন প্রায় ১৮০ থেকে ২০০ বস্তা সার নামিদামী কোম্পানির মোড়কে বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটিতে নেই কোনো সাইনবোর্ড বা বৈধ কাগজপত্র, কোন অনুমোদন। রাস্তার পাশে ফাঁকা জমিতে গোবরের শ’ শ’ বস্তা স্তূপ করা রয়েছে। কয়েকজন শ্রমিক সেখানে গরুর গোবর শুকিয়ে বস্তায় ভরে দিচ্ছেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, এখানে থাকা সার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংগ্রহ করে নিজেদের নামে বিক্রি করে। ফার্মের পাশের একটি ঘরের ওপর ইস্পাহানি এগ্রো লিমিটেড লেখা প্রায় একশ বস্তা রাখা অবস্থায় দেখা যায়।
স্থানীয় লিংকন নামের একজন বলেন, “এই বস্তাগুলো আমরা পিটিআই মোড়ের এগ্রো সল প্রজেক্টে পাঠাই। তৌফিক আংকেল ওনার মালের সঙ্গে মিক্স করে বিক্রি করেন। ইস্পাহানি কোম্পানির বস্তাগুলো আসলে স্থানীয় আরেকটা ট্রেডার্সের মালিক দিয়ে গেছে।”
ফার্মের কর্মচারী নুহু নবী জানান, “আমি পাঁচ মাস ধরে এখানে কাজ করছি। ইস্পাহানি এগ্রো লিমিটেডের বস্তা প্রায়ই আসে। আমরা বস্তা ভর্তি ও সেলাই করি, পরে গাড়ি এসে নিয়ে যায়।”
প্রতিষ্ঠানের মালিক রকিবুল ইসলাম আকাশ বলেন, “আমি এগ্রো সল ও মন্ডল ট্রেডার্স থেকে কম্পোস্ট তৈরি শেখেছি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ‘সান এগ্রো ফার্ম ফার্টিলাইজারের’ নামে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছি।” তবে তিনি সার উৎপাদনের জন্য কোনো সরকারি অনুমোদনপত্র বা পরিবেশ ছাড়পত্র দেখাতে পারেননি।
তিনি আরও জানান, “আমাদের উৎপাদিত সার পিটিআই মোড়ের এগ্রো সলসহ একাধিক ট্রেডার্স ক্রয় করে। ইস্পাহানি লিমিটেডের বস্তাগুলো তারাই দিয়েছিল। আমরা শুধু ভর্তি করে দিয়েছি।”
স্থানীয় কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “নামিদামী কোম্পানির বস্তা দেখে আমরা সার কিনেছিলাম। কিন্তু জমিতে প্রয়োগের পর ফলন কমে গেছে। পরে বুঝি এটা আসল কোম্পানির নয়।”
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার গঠনের অননুমোদিতভাবে উৎপাদিত এসব সার মাটির জৈব গুণ নষ্ট করছে এবং ফসলের ক্ষতি করছে। তাছাড়া, ‘সান এগ্রো ফার্ম’-এ নেই কোনো মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, পরীক্ষাগার বা পরিবেশ সুরক্ষার সুবিধা।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, অননুমোদিতভাবে উৎপাদিত এসব সার মাটির জৈব গুণ নষ্ট করছে এবং ফসলের ক্ষতি করছে। এছাড়া, ‘সান এগ্রো ফার্ম’-এ নেই কোনো মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, পরীক্ষাগার বা পরিবেশ সুরক্ষার সুবিধা।
তবে, স্থানীয় কৃষকদের অনেকেই দাবি করেন যে, স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তরের ঊন্নাষিকতায় বছরের পর বছর ধরে নকল জৈব সার উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।


