আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আলমডাঙ্গা থানার বিভিন্ন দুর্গাপূজা মণ্ডপ আকস্মিক পরিদর্শন করেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, বিপিএম-সেবা।
পুলিশ সুপার মণ্ডপগুলোতে উপস্থিত পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য, ভক্ত ও স্থানীয় সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তিনি বলেন, “শারদীয় দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব নয়, এটি বাংলাদেশের সর্বজনীন উৎসব। এখানে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণ আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চিত্র তুলে ধরে। কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা বা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে কেউ যাতে না পারে, সেদিকে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবে।”
তিনি আরও জানান, আলমডাঙ্গা থানার প্রতিটি পূজা মণ্ডপে পুলিশ মোতায়েন থাকবে, পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে আনসার ও গ্রাম পুলিশদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপে থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরা, মেটাল ডিটেক্টর এবং টহল টিম। জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে প্রতিটি মণ্ডপকে সংযুক্ত রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দকে উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার আহ্বান জানান এবং দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, “সকলের সহযোগিতায় দুর্গাপূজা আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপিত হবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।” এই আকস্মিক পরিদর্শনে আরও উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাঃ মাসুদুর রহমান, পিপিএম, পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) বিকাশ চন্দ্র সরকার, বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুধীজন।
জানা গেছে, এ বছর আলমডাঙ্গা উপজেলায় মোট ৩৫ টি দুর্গাপূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ১২টি মণ্ডপকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে নির্দিষ্ট সংখ্যক পুলিশ ও আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
স্থানীয়রা জানান, পুলিশ সুপারের আকস্মিক এ পরিদর্শনে পূজা উদ্যাপন কমিটি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তারা মনে করছেন, প্রশাসনের এ ধরণের তৎপরতা দুর্গোৎসবকে আরও নিরাপদ ও আনন্দঘন পরিবেশে পরিণত করবে।