আলমডাঙ্গার নাগদাহ ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় আহত কর্মী মৃত্যু, প্রতিবাদ সমাবেশ 

আলমডাঙ্গার নাগদাহ ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় আহত কর্মী মৃত্যু, প্রতিবাদ সমাবেশ 

আলমডাঙ্গার নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সহিংসতার ঘটনায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত নৌকা সমর্থনকারী দবির আলীর মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসার ১৩ দিনপর শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকাল ১০ টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত দবিরের লাশ শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় আলমডাঙ্গায় পৌঁছাই। মৃত্যুর ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সমর্থনকারীরা লাশ নিয়ে পৌর এলাকার স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রাঙ্গণে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। মিছিলে দ্রূত আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানায়।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, গত ১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে গত ১১ মার্চ রাতে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রার্থী হায়াত আলি ও স্বতন্ত্র চশমা প্রার্থীর সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে উভয় পক্ষের ১১ জন আহত হয়। নৌকার সমর্থকের একই পরিবারের দুই ভাইসহ তিনজন গুরুত্বর আহত হয়। আহতের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। গুরুত্বর আহত অবস্থায় দবির উদ্দীনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১২ দিন লাইফ সাপোর্ট (আইসিউতে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল ১০ টায় তিনি মারা যায়। শুক্রবার বিকেলে লাশ ময়নাতদন্ত শেষে আলমডাঙ্গার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। রাত ১০ টার দিকে আলমডাঙ্গা পৌর শহরের স্বাধীনতা স্তম্ভের নিকট পৌঁছালে স্থানীয় নেতারা লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্স সহ প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এসময় উপস্থিত ছিলেন নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও নৌকার প্রার্থী হায়াত আলি সহ দুই শতাধিক নেতাকর্মী। প্রতিবাদ সমাবেশে নিহত দবির আলীর দ্রূত গ্রেফতারসহ ফাঁসির দাবি জানান।

নিহত দবির আলী ছেলে মোস্তাফিজুর ওরফে খোকন বলেন, আমার বাবা নাগদহ ইউনিয়ন পরিষদের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মতিয়ার রহমান হায়াতের কর্মী ছিলেন। গত শনিবার (১১ মার্চ) রাত ৮টার দিকে জহুরুলনগর গ্রামে আমার বাবাসহ কর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করছিলেন। এসময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী (বর্তমানে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত) নিজে উপস্থিত থেকে তার কর্মীরা হামলা চালায়। এতে আমার বাবা দবির আলী সহ আমার কয়েকজন কর্মী আহত হন। রাতেই আমার বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিউতে ভর্তি করা হয়। টানা ১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হেরে গেলেন বাবা। আমি এই হত্যার বিচার চাই। আজ রাতে কিংবা আগামীকাল মরদেহ ময়নাতদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে চুয়াডাঙ্গায় নিয়ে আসা হবে।

আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আলিম বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মারামারিতে আহত দবির উদ্দিন গতকাল শুক্রবার সকালে রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। এ ঘটনার পূর্বে মারধরের মামলা করেছিলেন নিহতের ছেলে। নিহতের পরিবার হত্যা মামলা দায়ের করলে আমরা গ্রহন করব।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) অনুষ্ঠিত নাগদহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ইমতিয়াজ বিপুল জোয়ার্দ্দার চশমা প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৮০ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে বিজয়ী হয়েছেন।