আলমডাঙ্গার ৪টি ভাটায় জ্বলছে কাঠ ( ফলোআপ )

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আলমডাঙ্গার ৪ টি ভাটায় দীর্ঘদিন পোড়ানো হচ্ছে বনজ গাছ। এসব ইট ভাটায় খড়ি পোড়ানোর পাশাপাশি ইটের পরিমাপ নিয়েও রেয়েছে বিতর্ক। সরকারি নির্দেশে অনুযায়ী ইট কয়লায় পোড়ানোর নির্দেশ থাকলেও বিভিন্ন দফতরকে ম্যানেজ করে চলছে গাছ পোড়ানোর মহা-উৎসব।

স্থানীয় দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকায় ইট ভাটায় গাছ পোড়ানোর ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলেও উপজেলা প্রশাসনসহ নিরব ভূমিকা পালন করছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। গাছ পোড়ানোর ঘটনায় জেলার একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এ নিয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশাসন কেন্দ্রিক তিব্র সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলায় প্রায় ২০ টি ইট ভাটা রয়েছে। বর্তমানে এসব ইট ভাটায় কাঠ পোড়ানোর নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী কয়লায় পোড়ানোর নির্দেশে ছাত্রপত্র দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বর্তমানে বৈদেশিক আমদানিকৃত কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক ভাটায় গোপনে খড়িতে পুড়াচ্ছে ইট।

তবে, প্রতি বছর কয়লার দাম স্থবির থাকলেও আলমডাঙ্গার ৪ টি ইট ভাটায় পোড়ানো হয় বনজ গাছ। ভাটাগুলো হলো- জামজামি ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের ভাটা মালিক ওয়াল, কুমারি ইউনিয়নের বন্ডবিল এলাকার ভাটা মালিক মতিয়ার রহমান বাবু, কুমারি ইউনিয়নের ভেটেনারি কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থিত আব্দুল মজিদ ও কালিদাসপুর সাদাব্রিজ এলাকায় অবস্থিত ভাটা মালিক আব্দুল খালেক।

দীর্ঘদিন এ ৪ টি ভাটায় ইট পোড়ানো হয় সবুজ বনায়নের গাছ দিয়ে। এসকল ইট ভাটায় নেই নবায়নযোগ্য লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র। তবুও আলমডাঙ্গা উপজেলায় সরকারি কর্মকর্তাদের চোখের সামনে গাছ পুড়িয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।

বিভিন্ন সময় ইট পোড়ানো মৌসুমে নাম মাত্র ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হলেও খড়ির ভাটাই পৌছাই না কোন কর্মকর্তারা।

ভাটা মালিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছর শুরুতে প্রতি টন কয়লার দাম ছিল ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে। কিন্তু বর্তমানে এর বাজারদর দাঁড়িয়েছে প্রতি টন ২৩ হাজার থেকে ২৪ হাজার টাকা। এতে কয়লায় ইট তৈরিতে অনেক বেশি খরচ হচ্ছে। এ রকম ভাটায় প্রতি হাজার ইট তৈরিতে সাড়ে সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। তাতে লোকসানে পড়ছেন মালিকরা। এই পরিস্থিতিতে অনেক ইটভাটায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। তাদের হাজারে খরচ হচ্ছে পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা।

এতে কাঠ পোড়ানো ভাটার দিকে ঝুঁকছেন অনেক মালিক। এভাবে চললে পরিবেশের ক্ষতি বাড়তেই থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন ব্যক্তিরা।

ভুক্তভোগী মহল জানায়, গত বছর গাড়ি প্রতি ইট ১৪/১৬ হাজার টাকায় ক্রয় করা হত। এবছর কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৮/২০ হাজার টাকা গাড়ি ইট ক্রয় করতে হচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ ইট ভাটায় খড়ি দিয়ে ইট পুড়িয়ে কয়লার দাম বৃদ্ধির অযুহাতে সাধারণ মানুষের নিকট থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ইট পোড়াচ্ছে খড়ি দিয়ে দাম নিচ্ছে কয়লায় পোড়ানোর। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ জানান ভুক্তভোগীরা।