আলমডাঙ্গায় ঈগল প্রতীকের কর্মীদের বিরুদ্ধে নৌকার কর্মীদের বাড়িতে হামলা অভিযোগ

আলমডাঙ্গায় সংসদ নির্বাচনের পরের দিন নাগদাহ গ্রামে ঈগল প্রতিকের কর্মীদের বিরুদ্ধে নৌকার কর্মীদের উপর দেশীয় অস্ত্রে হামলা ও ভাঙচুর এবং লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল সোমবার সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার নাগদাহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার জের ধরে আজ  মঙ্গলবার মধ্যরাতে আবারো নৌকার দুই কর্মীর বাড়িতে পেট্রোল বোমা ও খড়ের গাদায় আগুনের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানাপুলিশ ও ঘোলদাড়ি ফাঁড়ি পুলিশের যৌথ টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পেট্রোল বোমা উদ্ধার করে। ওই ঘটনার পরপরই এলাকাজুড়ে থমথমে বিরাজ করছে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ৭ জানুয়ারি রবিবার চুয়াডাঙ্গা ১ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনকে ঘিরে নাগদাহ দক্ষিণপাড়া গ্রামে আওয়ামীলীগের নৌকা ও স্বতন্ত্র ঈগল প্রতিকের দুই প্রার্থীর পক্ষে ওই এলাকার পৃথক কর্মীরা নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা করেন। পক্ষ-বিপক্ষে অংশ নেওয়া ও মতবিরোধের কারণে দু’গ্রুপে নির্বাচনি বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই সূত্র ধরে- গতকাল সোমবার সকালে ঈগল প্রতিকের কর্মী মৃত করিম মোল্লার ছেলে ইকরামুল মোল্লা (৪৬), পচা মোল্লা (৫১), ইদ্রিস মোল্লা (৪০) একই এলাকার আওয়ামীলীগের নৌকার কর্মী সাগর হুসাইন (৩৫) এবং তার পরিবারের উপর দেশীয় অস্ত্র (রামদা) নিয়ে হামলা চালায়।

এসময় ঈগল প্রতিকের কর্মীদের সমর্থনে হামলায় অংশ নেয় খাইরুল মোল্লার ছেলে শামিম মোল্লা (২৬), রায়হান মোল্লা (২১), মৃত দিন মোহাম্মদের ছেলে মিলন মোল্লা (৩৪), ইকরামুল মোল্লার ছেলে সুমন মোল্লা (২৮), সোহেল মোল্লক (২৪), আবু বক্করের ছেলে জাহাঙ্গীর বিশ্বাস (৩২), পচা মোল্লার ছেলে আলিহিম মোল্লা (২৬), রব্বানি মোল্লার ছেলে ইমরান মোল্লা (২৬), জনি মোল্লা (৩২), মৃত আদম বিশ্বাসের ছেলে কটু বিশ্বাস (৩৮), আলাউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে লতিফ বিশ্বাস (৪০), মৃত মোজাহার বিশ্বাসের ছেলে মাহাবুল বিশ্বাস (৪০), মৃত বরকতের ছেলে শওকত আলী (৫৫)। ওই ঘটনার সময় নৌকার কর্মী সাগর হুসাইনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এছাড়াও আজ মঙ্গলবার মধ্যরাতে প্রতিবেশী হাবিবুর রহমানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে খড়ের গাদায় আগুন লাগিয়ে দেয়।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী সাগর হুসাইন জানান, নির্বাচন কেন্দ্রীক ইকরামুল মোল্লা গং তারা ঈগল প্রতিকে নির্বাচনের জন্য চাপ দেয়। আমি নৌকার একজন কর্মী। এছাড়া আমার মহল্লার অনেকে ছেলুন জোয়ার্দ্দারের সমর্থনকারী। সেই হিসেবে এ মহল্লার নৌকার বিপরীতে ভোট না করায় তারা বিভিন্ন হুমকি দিতে থাকে।

তিনি আরো বলেন, গতকাল সোমবার সকাল ৯ টার দিকে ঈগল প্রতিকের প্রার্থী হেরে যাওয়ায় ১৫-২০ জন ঈগল প্রতিকের কর্মীরা আমার বাড়িতে জোরপূর্বক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। আমি পালিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিলেও দরজায় রামদা দিয়ে কোপ মারে। এতে আমি আমার পরিবারসহ মহল্লাবাসী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এছাড়া আজ মঙ্গলবার মধ্যরাতে আমার বাড়ির রান্না ঘরের টিনের উপর পেট্রোল বোমা রেখে যায়। এছাড়া প্রতিবেশী নৌকা কর্মী রবিউলের বসতবাড়িতে থাকা খড়ের গাদায় আগুন লাগিয়ে দেয়।

আরেক ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান জানান, আজ মঙ্গলবার রাতে পরিবার নিয়ে ঘরে ঘুমিয়েছিলাম।হঠাৎ রাত ১ টার দিকে কয়েকজন লোকের উপস্থিত টের পাই। গতকাল সোমবারের ঘটনার কারণে আমরা কেউ বাইরে বের হয়নি। পরে প্রতিবেশীদের চিৎকারে বাইরে বেরিয়ে খড়ের গাদায় আগুন দেখতে পায়।

তিনি আরো বলেন, গতকাল সোমবার সকালে ঈগল প্রতিকের কর্মীরা সাগরের নিকট হামলা চালালে আমি প্রতিবাদ করি। ওই একারণেই আমার বাড়িতে অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

আলমডাঙ্গা ঘোলদাড়ি ফাঁড়িপুলিশের আইসি গোলাম হোসেন জানান, গতকাল সোমবারের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ওই মামলায় বাদি পক্ষ জামিন নিয়েছে। তবে, আজ মঙ্গলবার রাতে পেট্রোল বোমা উদ্ধার ও অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ভুক্তভোগীরা কেউ এখন পর্যন্ত লিখিত কোন অভিযোগ করেনি।