আলমডাঙ্গায় নিখোঁজের ৫দিন পর গৃহবধূর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

নিখোঁজের ৫ দিনপর ভাংবাড়িয়ার মাথাভাঙ্গা নদী থেকে পপি খাতুন নামের এক গৃহবধুর অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার বিকেল ৪ টার দিকে আলমডাঙ্গার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের কারিগরপাড়া মাঠের মাথাভাঙ্গা নদী থেকে এ লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গার এডিশনাল এসপি সদর সার্কেল আনিসুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ঘটনায় স্বামীসহ ২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। নিহত গৃহবধু পপি খাতুন উপজেলার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের নগরবোয়ালীয়া গ্রামের তুহিনের স্ত্রী ও একই উপজেলার বেলগাছি গ্রামের ইসলামপাড়ার নুরুল ইসলাম ভোলা শেখের মেয়ে।

জানাগেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউনিয়নের ইসলামপাড়ার নুরুল ইসলাম ভোলা শেখের মেয়ে পপি খাতুন। গত বুধবার উপজেলার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের নগরবোয়ালিয়া গ্রামের পপি খাতুন তার স্বামী তুহিনের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিলেও পপি খাতুনের সন্ধ্যান না পেয়ে পিতা নুরুল ইসলাম ভোলা শেখ রবিবার আলমডাঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি করে।

সাধারণ ডায়েরি করার ১ দিনপর আলমডাঙ্গার ভাংবাড়িয়ার মাথাভাঙ্গা নদীতে স্থানীয়রা সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে অর্ধগলিত নারীর লাশ ভাসতে দেখে। পরে খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে। সন্ধ্যায় গৃহবধু পপির মরদেহ পোস্টমর্টেম রিপোর্টের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।

গৃহবধুর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পপির স্বামী তুহিন ও প্রতিবেশি ঝন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সদর সার্কেল আনিসুজ্জামান, থানার পরিদর্শক ওসি তদন্ত তুহিনুজ্জামান খান , পরিদর্শক ওসি অপারেশন একরামুল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

স্থানীয়রা জানায়, সোমবার দুপুরে এলাকার কয়েকজন নারী মাথাভাঙ্গা নদীতে গোসল করতে নামে। এসময় নদীতে একটি নারীর মরদেহ ভাসমান অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানায়। পরে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

নিহতের বাবা ভোলা শেখ বলেন, পাঁচদিন আগে আমার জামায় তুহিনসহ পরিবারের সদস্যরা আমাকে জানায় মেয়ে পপি খাতুন কোন ছেলের সাথে চলে গেছে। কার সাথে গেছে জিজ্ঞাসা করলে কোন সুদুত্তর দেয়নি তারা। এরপর আমি আলমডাঙ্গা থানাতে জিডি করি। পুলিশ ও আমরা অনেক খুজেছি। পাইনি আমার মেয়েকে। আজ আমার মেয়েটাকে জীবিত পেলাম না, পেলাম মৃত মেয়ে।

তিনি আরও বলেন, আমার নাতী মিমের বয়স ১০ বছর। এর আগে অনেকবার তুচ্ছ ঘটনায় জামায় তুহিন ও তার পরিবার কর্তৃক নির্যাতনের স্বীকার হয়ে বাড়ি চলে আসে। তাই আমার ধারণা জামায় তুহিন ও তার পরিবারের সদস্যরা নির্যাতনের পর হত্যা করেছে আমার মেয়েকে। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পরিদর্শক তুহিনুজ্জামান খান বলেন, নিখোঁজের ৫ দিনের মাথায় মাথাভাঙ্গা নদী থেকে পপি খাতুনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পপি খাতুনকে হত্যা করা হয়েছে। সুরতহাল প্রদিবেদন শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রহস্য উম্মোচনে মাঠে নেমেছে পুলিশ।