আলমডাঙ্গায় পিস হিসেবে কিনে কেজিতে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ

চলতি সিয়াম সাধনের মাস মাহে রমজান। সিয়াম সাধনের এ মাসে মৌসুমি ফলের কদর একটু বেশিই থাকে। এ বছর মৌসুমি ফল আম ও লিচু দেরিয়ে বাজার জাত হওয়ার কারণে কদর বেড়েছে পানীয় ফল তরমুজের। সারাদিন রোজা শেষে সন্ধ্যায় ইফতারির মুহুর্তে এক ফালি তরমুজ মুসল্লিদের তৃষœাত্ব মনটাকে সতেজ করে তোলে।

মৌসুমি এ ফলটি প্রতি বছর ছোট-বড় পিস হিসাবে বিক্রয় করা হলেও এ বছর চড়া দামে কেজিতে বিক্রয় করছে ব্যবসায়ীরা। এ ফলটি নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ফল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণেই এ বছরের পানীয় ফল তরমুজ চড়া দামে বিক্রয় করছে বলে অভিযোগ তোলে সাধারণ ক্রেতারা।

জানাযায়, আলমডাঙ্গা উপজেলায় প্রায় কয়েকশত ফলের দোকান সহ ফুটপথের খুচরা বিক্রয় করা হচ্ছে পানীয় ফল তরমুজ। এ তরমুজ চলতি রমজানে পানিও পিপাসা মেটাতে গুরুত্বর ভূমি পালন করে। এ কারণেই এবছরে তরমুজ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট বসিয়ে তারা অধিক মূল্যে বিক্রয় করছে।
সাপ্তাহিক আলমডাঙ্গা নির্বাহি কর্মকর্তা পুলক কুমার মন্ডল ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি হুমায়ন কবির বাদশা রমজান মাসে নিয়মিত বাজার মনিটরিং কাজ করে আসছে। তরমুজ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট রোধ করতে তারাও হিসমিস খাচ্ছে। প্রশাসনের উপস্থিতিতে ৩৫/৪০ টাকা দরে বিক্রয়ের দাবি করলেও চলে গেলে আবারো কেজিতে বিক্রয় হয় ১০/১৫ টাকা চড়া দামে।

আলমডাঙ্গায় পাইকারি তরমুজ বিক্রেতার সাথে কথা হলে তারা জানান,‘ আমরা চরাঞ্চল থেকে কেজিতে ক্রয় করেছি তরমুজ। এটি একটি পচনশীল ফল হওয়ায় পরিবহন ঝুঁকিতে থাকতে হয়। করোনাকালীন সময়ে পরিবহন খরচ ও এ ফলের উচ্চ দরের কারণে আমরাও এ বছর ফল বিক্রয়ে জবাব দিহিতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে”।

খুচরা ফল ব্যবসায়ী আতিয়ার রহমান, সুমন জানান,‘ গত বছর তরমুজ ফল পিস হিসাবে বিক্রয় করেছি। এ ফল বিক্রয়ে ব্যাপক লোকসানেও পড়তে হয়েছে। এ ফল পিস হিসাবে বিক্রয় করা হলেও তা চাহিদা ছিলো অনেক কম। কিন্তু এ বছর তরমুজ ফল মানুষের মধ্যে কেনো এত কৌতুহল”।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক আলমডাঙ্গা বাজারে ঘুরে যে চিত্র দেখা যায়, আনন্দধাম এলাকায় কয়েক জন ফুটপথের পাশেই খুচরা ও পাইকারী তরমুজ বিক্রয় করছে। একেকটি কেজি ৩/৮ কেজি পর্যন্ত। দাম ও প্রায় ৩শত টাকা থেকে ৫শত টাকার উর্ধে।

এবিষয়ে তরমুজ ক্রেতা বকসিপুর গ্রামের আজিবর বলেন, বয়সে কোন দিন এত টাকা দিয়ে তরমুজ কেনা হয়নি। নাতিদের জন্য একটি তরমুজ ৩শত ২০ টাকায় কিনেছি। বেলগাছি গ্রামের আমজেদ বলেন, ছোট সাইজের একটি তরমুজ নিবো এমটা ভেবে দোকানে গিয়েছিলাম। তরমুজের দাম বেশি হওয়ায় কেনার সামর্থ না হওয়ায় বাড়ি ফিরে যাচ্ছে বলেও তিনি জানান।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহি অফিসার পুলক কুমার মন্ডল জানান,“ তরমুজ নিয়ে বর্তমানে জনসাধারণের মাঝে বিতর্কের স্থান নিয়েছে। আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক বাজার মনিটারিং করা হচ্ছে। কেউ যদি উচ্চ মূল্যে দ্রব্য বিক্রয় করে তাদের ভোক্তা অধিকার আইনে শাস্তি দেওয়া হবে।

এছাড়াও তিনি আরো বলেন, আমরা তরমুজের দোকানে গিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্ঠা করছি। বিক্রেতার কেজি দরে কিনে তারাও কেজি দরে বিক্রয় করছে। তাদের ক্রয় মেমো আমরা যাচাই বাছাই করেছি।