আলমডাঙ্গায় বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে শিশুকে হত্যার অভিযোগ, ঘাতক বাবা আটক

আলমডাঙ্গায় বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে আড়াই মাস বয়সী এক শিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত বাবাকে আটক করেছে পুলিশ।

বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে আটক করা হয়। নিহত শিশু ইকবাল হোসেন আলমডাঙ্গা উপজেলার আঠারোখাদা গ্রামের ইখলাছ উদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, গত কয়েক মাস যাবৎ ইখলাছ উদ্দিন তার দ্বিতীয় স্ত্রী মিতা ও শিশু সন্তানকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মাঝেরপাড়ার পলাশ উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়ায় থাকেন।

এর আগে বুধবার সকাল ৮টার দিকে মাঝের পাড়ায় ওই ঘটনা ঘটে। অসুস্থ্য হয়ে পড়লে সকালেই শিশু ইকবালকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শিশুটিকে।

শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শিশুটিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক। সেখানে নেয়ার পথে মারা যায় শিশুটি। সন্ধ্যায় খবর পেয়ে মুন্সিগঞ্জের সোনাতনপুর থেকে নিহত শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শিশু ইকবালের মা মিতা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, আমার অন্য এক জায়গায় বিয়ে হয়েছিল। পারিবারিক কলহের কারণে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। প্রথম স্ত্রীর কোন সন্তান না হওয়ায় গত ৪ বছর আগে ইখলাছ আমাকে বিয়ে করে।

বিয়ের পর থেকে সে আমাকে সন্দেহ করতে থাকে। পরে আমাদের কোলজুড়ে আসে এক ছেলে সন্তান। ওই ছেলে তার নয় বলে জানায় ইখলাছ।

তিনি আরও বলেন, আজ সকালে বাড়ির কাজ করছিলাম। সেসময় ইখলাছ ছেলেকে কোলে নেয়। হঠাৎ সুস্থ ছেলে কেঁদে ওঠে। পরে গিয়ে দেখি আমার ছেলের বাম পা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে।

ইখলাছের নিকট জানতে চাইলে সে টিকা দেয়ার স্থান থেকে রক্ত বের হচ্ছে বলে মিতাকে জানায়। পরে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তার জানায়, টিকা দেয়ার স্থান থেকে কোন রক্ত বের হয়নি।

ছেলের বাম পায়ের অন্য স্থানে একটি ইনজেকশন পুশ করার চিহ্ন রয়েছে। সেখানে ফুলে গেছে। আমার ছেলেকে বাম পাশে বিষ মিশ্রিত ইনজেকশন পুশ করে হত্যা করা হয়েছে বলে মিতা অভিযোগ করেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন জানান, দুপুরে শিশুটিকে আমার কাছে নিয়ে আসা হয়। তখন শিশুটির অবস্থা খারাপ ছিল।

শিশুটির খিচুনি হচ্ছিল। তার মা বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করার অভিযোগ করছিলেন। শিশুটির বাম পায়ে একাধিক ইনজেকশন পুশের চিহ্ন ছিল।

শিশুটির শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়। তবে, শিশুটির পায়ে কোন ইনজেকশন দেয়া হয়েছে তা ময়না তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। বেঁচে থাকলে রক্ত পরীক্ষা করে বলা যেত। তার আগেই তো শিশুটি মারা গেল।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যায় খবর পেয়ে সোনাতনপুর গ্রামে পৌঁছে নিহত শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে শিশুটির বাবা ইখলাছকে।