আলমডাঙ্গায় মহিলা ডাক্তারকে হেনস্থাকারী রহিম গ্রেফতার

আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার আশরাফুন নাহার নীনা ও আরএমও মোর্তজা আরেফিনকে লাঞ্চনাকারী রহিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার দিনগত গভীররাতে পাবনার রূপপুরে আত্মগোপনে থাকা রহিমকে গ্রেফতার করা হয়।

থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর বলেন, করোনা মহামারির বিরুদ্ধে দেশের চিকিৎসকরা সন্মুখযোদ্ধা হিসেবে জীবনপন রেখে লড়ে যাচ্ছে। এমন সময় অকারনেই এক মাস্তান হাসপাতালে ঢুকে ডাক্তারকে লাঞ্চনা করে। ঘটনার পরপরই পুলিশ তাকে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা করেছিল। অবশেষে ৪৮ ঘন্টা না যেতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরপর পুলিশের সাড়াশি অভিযানে রহিম পাবনার রূপপুরে পালিয়ে যায়। তার মোবাইল ট্র্যাকিং করে আসামী রহিমের অবস্থান জানতে পারি। শনিবার রাতে রূপপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও মেডিকেল অফিসার আশরাফুন নাহার নীনা বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) দুপুরে হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় কুমারী ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আব্দুর রহিম তার বাবার পায়ের পীড়ার সমস্যা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালে ঢোকেন। ডাক্তার আশরাফুন নাহার নীনা তার পিতাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন। রোগীকে না দেখে ব্যবস্থাপত্র না দেওয়ারও কথা বলেন।

কিন্ত রহিম তার বাবার অনুপস্থিতিতেই চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দিতে চাপাচাপি করতে থাকেন। এ পর্যায়ে দু‘জনে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে আব্দুর রহিম ডাক্তার নীনার চুলের মুঠি ধরে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেন।

এ সময় আব্দুর রহিমের হুমকি-ধামকিতে ডাক্তার নীনা অসহায় হয়ে পড়লে অপর একটি কক্ষ থেকে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও মোর্তজা আরেফিন বেরিয়ে আসেন। ডাক্তার আরেফিন ও নীনা রহিমকে ধরে আটকে ফেলতে যান। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাটি ঘটে। হাসপাতালের কলাপসেবল গেইটে তালা লাগিয়ে দেওয়ার আগেই জোরাজুরি করে রহিম দ্রুত হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান।

ডাক্তার নীনা বলেন, পৌনে দুইটার সময় অপারেশন থিয়েটারের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় একজন এসে বলেন, তার বাবার পায়ে কাটা ফুটেছে ওষুধ লিখে দিতে। আমি বলেছি, আপনার বাবাকে নিয়ে আসুন তার পায়ের অবস্থা দেখে চিকিৎসা দেব। কিন্ত তিনি রেগে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। চুলের মুঠি ধরে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়ারও হুমকি দেয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হাদি জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলেন, রহিম নামের একজন হাসপাতালে ঢুকে কর্তব্যরত ডাক্তারকে গালিগালাজসহ হেনস্থা করেছে। তার নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অবশেষে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করায় তিনি পুলিশকে ধন্যবাদ জানান।