আলমডাঙ্গায় স্বতন্ত্র প্রার্থীকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকি ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজমুল হোসাইনকে বেধড়ক মারধরসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে নৌকা প্রতীকের বিজয়ী চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলামসহ তার সমর্থকেরা।

বুধবার  সন্ধার দিকে ডাউকি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে নাজমুল হোসাইনকে উদ্ধার করে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই। এসময় পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে দুটি মোটরসাইকেল ও অজ্ঞাত ব্যাক্তির একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে তারা।

এতে পুলিশের পরিদর্শকসহ চারজন আহত হয়। আহত নাজমুল ইসলামের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিতসার জন্য চিকিতসক কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। আহত নাজমুল হোসাইন আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

জানাগেছে, আলমডাঙ্গার ডাউকি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী নৌকার চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম। গতকাল বুধবার নির্বাচনি পরবর্তী স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হুসাইনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী তরিকুলের সমর্থিত লোকজন নাজমুলকে মারপিট ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। গুরুত্বর অবস্থায় তাকে হারদি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক কুষ্টিয়ায় রেফার করে।

এ ঘটনায় রাত ৯টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপুর নির্দেশে আলমডাঙ্গার সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিফাত ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন। এ সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের আটক ও চেয়ারম্যান থেকে প্রত্যাহার না করা হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেয়।

ডাউকি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বুধবার সন্ধার দিকে ডাউকি ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হোসাইনকে লাঠিসোটা ও জেআই পাইপসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে নৌকা প্রতীকের বিজয়ী চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলামসহ তার কর্মীরা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালে তারা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই।

আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক রিফাত বলেন, আমাদের আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ডাউকি ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজমুল হোসাইনকে মারধর করেছে নৌকার প্রতীকের বিজয়ী চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম। এঘটনার পর আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্দ্যোগে শহরে বিক্ষোপ মিছিল বের করে। চেয়ারম্যান থেকে প্রত্যাহার ও ২৪ ঘন্টার মধ্যে তরিকুল ইসলামকে গ্রেফতার না করলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাবো আমরা।

এদিকে নাজমুল ইসলামকে মারধরের খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়। এতে নৌকা প্রতীকের বিজয়ী চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলামের কর্মীদের সাথে পুলিশের সাথে ধাওয়া ও পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশের দুইটা এবং অজ্ঞাত ব্যক্তি একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। এসময় আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) মাহবুব হোসেন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) শরিফুল,কনেস্টবল শাওন, মামুন আহত হয়।

আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) শরিফুল ইসলাম বলেন, ডাউকি ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের বিজয়ী চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলামের কর্মীরা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজমুল ইসলামকে মারধর করে। খবর পেয়ে উপস্থিত হলে পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। চার পুলিশ সদস্য আহত হয় এবং পুলিশের দুটি মোটরসাইকেল ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।