ইউপি চেয়ারম্যান মতিনের ক্ষমতার দাপট?

সড়ক দূর্ঘটনা ঘটিয়েও আহতকে চিকিৎসার ব্যবস্থা না করেই ক্ষমতার দাপটে দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেল তুলে নিয়ে গেলেন ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতিন।

দাপুটে এই মতিউর রহমান মতিন মেহেরপুর সদর উপজেলার নবগঠিত শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

জানা গেছে, মেহেরপুর শহরের মফিজুল ইসলামের ছেলে মিলন হোসেন ও শ্যামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতিন প্রাইভেট কারে যার নং ঢকা মেট্রো-গ- ২৮-৮৬৪৮ ) যোগে মেহেরপুর থেকে কুষ্টিয়া যাচ্ছিলেন। আর বেপরোয়া গতিতে প্রাইভেট কারটি চালাচ্ছিলেন নাহিদ হোসেন।

এসময় গাংনী উপজেলার গোপালনগর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে রাজা মিয়া ও তার অপর বন্ধু মিলে মেহেরপুরে যাচ্ছিলেন।

গাংনী বনবিভাগের সামনে একটি ইজিবাইক ওভারটেক করার সময় প্রাইভেট কারটি এসে মোটরসাইকেলটিকে স্বজোরে ধাক্কা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় মোটরাসাইকেল চালক রাজা মিয়া।

আহত রাজাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র থেকে আজ মঙ্গলবার (২৩ আগষ্ট) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

আহত রাজার দুলাভাই গাংনী পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক আবু হোসেন বলেন, রাজার ডান পা ভেঙ্গে গেছে। তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুৃষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেছে চিকিৎসক।

গতকাল সোমবার (২২ আগষ্ট) দুপুরের দিকে গাংনী উপজেলা শহরের বনবিভাগ পাড়া এলাকায় প্রাইভেট কারের সাথে মোটরসাইকেলের এই দুর্ঘটনা ঘটে।

আহত রাজা বলেন, মোটরসাইকেল যোগে মেহেরপুর যাওয়ার পথে গাংনী বনবিভাগের সামনে একটি ব্যটারী চালিত ইজিবাইককে ওভারটেক করার সময় সামনের দিক থেকে আসা দ্রæতগামী প্রাইভেট কার আমাদের এসে ধাক্কা দিলে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ি।

এসময় আমাকে স্থানীয়রা তুলে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করছিল। ওই প্রাইভেট কারের ভিতরে থাকা যাত্রীরা আমাকে কোনো ধরণের সহযোগীতা না দিয়ে আমার গাড়িটি ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। এসময় কিছু মানুষ তাকে বাধা দিলেও জোর করে গাড়ি ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়।

শিক্ষক আবু হোসেন বলেন, দুর্ঘটনায় আমার শ্যালক রাজা মিয়া মারাত্বক আহত হলেও তাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা না করেই জোর করে মোটরাসাইকেলটি ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায় এই চেয়ারম্যান।

প্রত্যক্ষদর্শি সাগর ও জামান হোসেন জানান, প্রাইভেট কারটির গতি বেপরোয়া থাকলেও ভিতরে থাকা যাত্রী নিজেকে শ্যামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেলটি নিয়ে চলে যায়। আমরা বাঁধা দিলে সে নিজেকে চেয়ারম্যান ও মন্ত্রীর পরিচয় দিয়ে আমাদের ভয়ভীতি দেখায়।

এঘটনায় চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতিন বলেন, মোটরসাইকেল আরোহীরা ছিল মাদকাসক্ত। তারা বেপরোয়া গতিতে এসে আমাদের প্রাইভেট কারের সামনের অংশ ভেঙ্গে দিয়েছে। এখানে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।

তাই মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আমার ইউনিয়ন পরিষদে রেখে দিয়েছি।ইউনিয়ন পরিষদের বসেই তাদের বিচার হবে। প্রাইভেট কার মেরামতের ২ লক্ষ টাকা জরিমানা নিয়ে তারপর গাড়ি দেওয়া হবে। আহতকে চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে মোটরসাইকেল তুলে নিয়ে আসলেন কেনো এমন প্রশ্নের জবাব দেননি চেয়ারম্যান মতিন।

এঘটনায় আহত রাজা বাদি হয়ে গাংনী থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগপত্রটি পাওয়ার পরে গাংনী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ চেয়ারম্যান মতিনের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি নিজেকে মন্ত্রীর লোক পরিচয় দিয়ে বলেন, ওদেরকে আমার ইউনিয়ন পরিষদে পাঠিয়ে দেন।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিষয়টি আমার কানে আসার পর আমি খোঁজ খবর নিয়েছি। বিষয়টি মিমাংসার জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে।