বেতন তুলতে না পারায় ঈদ হচ্ছে না কোটচাঁদপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩ শ শিক্ষকের। ঈদের খুশি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
জানা যায়,কোটচাঁদপুর উপজেলায় ৭৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এ সব বিদ্যালয়ে রয়েছে ৪৫০ জন শিক্ষক। ওই সব শিক্ষকের বেতন হয় সোনালী ব্যাংক ও অগ্রনী ব্যাংক থেকে। বুধবার ছিল অফিসের শেষ দিন। বিকেল ৫ টা পর্যন্ত বেতন ঢোকেনি বলে জানতেন সব শিক্ষকরা। হঠাৎ ৫ টার পর সবাই টাকার ম্যাসেজ পান। এরপর টাকা তোলার জন্য ব্যাংকে ছোটেন শিক্ষকরা। বুধবার সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত দুই ব্যাংক থেকে টাকা নিতে পেরেছেন ৭০ জন শিক্ষক বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে।
বাকিরা টাকা তুলতে পারেনি। সর্বশেষ কোটচাঁদপুর সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তোলেন বাজেবামনদহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রবিউল ইসলাম ও অগ্রনী ব্যাংক থেকে টাকা নেন চাঁদপাড়া বিদ্যালয়ের আশরাফুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে বাজেবামনদহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইকবল হোসেন বলেন,টাকা তুলতে না পারায় আমার তেমন সমস্যা নাই। তবে যে সব শিক্ষকরা শুধু মাত্র বেতনের উপর নির্ভর,সে শিক্ষকরা সমস্যায় আছে। তবে কি কারনে বেতন ঠিক সময় হল না,তা তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কোটচাঁদপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান (কচি) বলেন,কোটচাঁদপুরে ৭৪ টি বিদ্যালয়ের ৪৫০ জন শিক্ষক আছে। এ সব শিক্ষকদের মধ্যে বুধবার বিকেল ৫ টা পর্যন্ত সবাই জানত বেতন হচ্ছে না। তবে ৫ টার পর ব্যাংক থেকে ফোন করেছিল টাকা নেয়ার জন্য। আমি জানিনা কতজন টাকা তুলতে পেরেছেন।
এড়ান্দা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাররফ হোসেন বলেন,ঈদের আর মাত্র ৩ দিন বাকি। এ ছাড়া আজই অফিসের শেষ কর্ম দিবস। আমার জানামতে এখনও পর্যন্ত ৩শ/৪শ শিক্ষক তাদের বেতন তুলতে পারেনি। এর জন্য তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাকি সালামকে দায়ি করছেন।
তিনি বলেন, বেতনের জন্য চাহিদা দিতে হয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। এরপর বেতন ছাড় হয়। তিনি সেই কাজটি করেছেন,তবে দেরি হয়ে গেছে। এর জন্য আজ অনেক শিক্ষকের ঈদের খুশি মিলান হয়ে গেছে।
সোনালী ব্যাংক কোটচাঁদপুর শাখার ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম বলেন,অফিস সময়ের পর টাকা ঢুকেছে ব্যাংকে। এরপর অনেককে ফোন করে বলা হয়েছে টাকা নেবার জন্য।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ১৫/২০ জনের মত টাকা নিতে পেরেছেন। এরপরও যদি কোন শিক্ষক টাকা নিতে আসেন আমরা টাকা দিব।
এর জন্য কারা মূলত দায়ি,এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা শিক্ষা অফিস ও হিসাব রক্ষন অফিসে কথা বলেন। ওনারা বলতে পারবেন। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ অনুযায়ী চলি। বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা দিলে আমরা টাকা দিবো।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাকি সালাম বলেন, একটু সমস্যা ছিল। সেটা সমাধান করতে ঢাকা গিয়েছিলাম। সব কাজ কর্ম করে দিয়ে এসেছিলাম। এরপর গেল ২৫ তারিখে বিষয়টি নিয়ে আবারও কথা বলি ঢাকাতে,ওনারা আমাকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। আমি অপেক্ষায় আছি। তাহলে এ টাকা নিয়ে আমাকে যারা দোষারোপ করছেন,এটা করা ঠিক হচ্ছে কি এমন প্রশ্ন তোলেন ওই কর্মকর্তা। সফটওয়ার সমস্যায় ব্যাংকে টাকা ঢোকেনি বলে পরে জানতে পেরেছেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মোবাইল যোগাযোগ করা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আনিসুল ইসলাম সঙ্গে। তবে ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।