উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে গ্রামীণ সড়কগুলোতে

গাংনী উপজেলায় অতি দরিদ্রদের জন্য সরকারের কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) প্রকল্পে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে গ্রামীণ সড়কগুলোতে। এতে হতদরিদ্র অসহায় নারী পুরুষদের বেকারদের জন্য সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থান, আর প্রাণ ফিরে পাচ্ছে অবহেলিত রাস্তাগুলো।

গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন সূত্র জানায়, ধানখোলা ইউনিয়নের জালশুকা কবরস্থান থেকে ভায়া তেঁতুলবাড়িয়া রাস্তা ভায়া দলেপাড়া মাসুদের বাড়ি হতে একরামুলের বাড়ি পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার কাঁচা মাটির সড়কটি র্দীঘদিন যাবত সংস্কার না হওয়ায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছিলেন এলাকাবাসী। সম্প্রতি সেটি সংস্কারে ইজিপিপি প্রকল্পে বরাদ্ধের অনুমোদন দেয় উপজেলা প্রশাসন। এরপর ৮৫ জন শ্রমিক দৈনিক চারশ টাকা মজুরিতে মাটি কেটে সড়কটি সংস্কারের কাজ শুরু করেন। এতে উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে গেছে গ্রামীণ এই সড়কের চিত্রটি। জালশুকা গ্রামের কৃষক রজব আলী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হারান মন্ডল ও শুকচাদ আলী বলেন, এলাকার মানুষের জন্য

এই রাস্তাটি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে মাঠের কৃষকরা তাদের ফসল ঘরে তুলে আনেন এই রাস্তা দিয়েই। দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল। রাস্তাটিতে মাটি ফেলার জন্য এখন চলাচলের উপযোগী হয়েছে।

গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার (পিআইও) নিরাঞ্জন চক্রবর্তি জানান, গাংনী উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে (ইজিপিপি) প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে গ্রামীণ সড়কগুলো মেরামত করে প্রসস্তের কাজ শুরু হয়েছে ৪৫ টিরও বেশি প্রকল্পে। এতে কর্মহীন ২ হাজার ৬৩১ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে।প্রতিদিন একজন শ্রমিক ৩৫ ঘনফুট করে মাটি কেটে থাকেন। তিনি বলেছেন, প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রকল্প অফিস থেকে প্রতিদিন তদারকি করা হয়ে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নের জন্য একজন করে ট্যাগ অফিসার দেখভাল করেন।

মেহেরপুর-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন বলেছেন, কর্মসৃজন প্রকল্প বর্তমান সরকারের একটি যুগান্তকারী কর্মসূচী। এই কর্মসূচীর ফলে গ্রামের অসহায় হতদরিদ্র পরিবারের মানুষের যেমন কর্মসংস্থান হচ্ছে। তেমন, গ্রামের ছোট খাটো কাঁচা রাস্তাগুলো সংস্কার হয়ে চলাচলের উপযোগী হয়ে উঠছে।

তিনি আর বলেছেন, গ্রামীণ সড়কগুলির উন্নয়নে উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট তদরাকি কর্মকর্তাদের কঠোর নজরদারির ফলে প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বেড়েছে। এছাড়া প্রকল্পের শ্রমিকদের মজুরির টাকা জিটুপি পদ্ধতিতে (সরাসরি সরকার থেকে পারসন) নগদ একাউন্টের মাধ্যমে পরিশোধ হচ্ছে। ফলে এই প্রকল্পের কাজে এখন নগদ টাকা লেনদেন না থাকায় অনিয়মও কমেছে।
সেই সঙ্গে বেকারদের কর্মসংস্থান হওয়ায় অনেক অসহায় পরিবারের অভাব দূর হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।

প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকের সর্দার আশরাফুল ইসলাম, সাজেদুল ইসলাম, জিনারুল ইসলাম, স্বামী পরিত্যক্তা সফুরা খাতুন, লাইলী আক্তার জানান, বর্তমানে তাদের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদ একাউন্টে সরাসরি মজুরির টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে। তারা বলেন, এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ৪০ দিনের মজুরির টাকা নগদ একাউন্টের মাধ্যমে পেয়েছেন বলে জানান।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএন) মৌসুমী খানম জানান প্রকল্পের কাজ সঠিক ভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিটি ইউনিয়নে কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি ইউনিয়নে কাজ তদারকির জন্য ট্যাগ অফিসার হিসেবে একজন সরকারি কর্মকর্তা আছেন। প্রকল্পগুলোতে শতভাগ শ্রমিক উপস্থিত থাকার জন্য উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কোনো রকম অনিয়ম পেলে তাদের বীল দেওয়া হবেনা।

পাশপাশি আমি নিজে এসব প্রকল্পের কাজ সরেজমিনে ঘুরে দেখছি। এতে অনিয়নের আর কোনো সুযোগ নেই।

তিনি আরও জানান, ইজিপিপি প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ সড়কগুলোতে উন্নয়ন হচ্ছে। ফলে এসব সড়কে যোগাযোগ সুবিধা আগের চেয়েও অনেক ভাল।