একজনের দুই এনআইডি!

১. মোছা: নাজমা খাতুন, পিতা- ইনছান আলী, মাতা বেলী খাতুন, স্বামী- আ:সালাম জন্ম তারিখ ২৮ মে ১৯৮৫ ইং। ভোটার নম্বর- ৪১৯৬১৫৫৩২১। মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা।
২. মোছা: মনোয়ারা বেগম, পিতা- ইনছান আলী, মাতা মোছা- বেলী খাতুন, স্বামী মো: আইয়ুব হোসেন, জন্মতারিখ ৫ মে ১৯৫৭। জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর-৪১৭২৬৬৯০৭১। মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড গোভীপুর গ্রামের মহাজেরপাড়ার বাসিন্দা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জাতীয় পরিচয় পত্র দুটিতে নাম, স্বামী ও ঠিকানা আলাদা থাকলেও দুটি জাতীয় পরিচয়পত্রের মালিক একজনই। মনোয়ারা বেগম ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, তার বয়স সর্বোচ্চ ৩৭ থেকে ৩৮ বছর হবে। যা প্রথম পরিচয় পত্রের সাথে মিল রয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় পরিচয় পত্রে তার বয়স দেখানো হয়েছে ৬৪ বছর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করার পূর্বে নাজমা খাতুন মনোয়ারা বেগম সেজে নতুন করে জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদন করেন। দ্বিতীয় স্বামী আইয়ুব হোসেব সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। স্বামীর পেনশন ও রেশন সুবিধা ভোগ করার জন্য তিনি দ্বিতীয় পরিচয় পত্রটি তৈরি করেন। ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল আইয়ুব হোসেন মৃতবরণ করলে একই সালের ৩০ মে তিনি চট্টগ্রাম সেনানিবাসে পেনশন সুবিধা ভোগ করার জন্য আবেদন করেন মনোয়ারা বেগম।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে হালনাগাদের সময় তিনি মনোয়ারা বেগম হিসেবে আবেদন করেন। কিন্তু নিকাহ নামা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
দ্বিতীয় স্বামী আইয়ুব হোসেনের দ্বিতীয় সন্তান আনোয়ার হোসেন এ নিয়ে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে একটি অভিযোগ করলে বিষয়টি সামনে আসে।
অভিযুক্ত নাজমা খাতুন বলেন, আমার স্বামী বেঁচে থাকাকালীন সময়ে মনোয়ারা বেগম নামের পরিচয়পত্রটি করে দিয়েছেন। আমার স্বামীর পেনশনসহ সকল কিছুতে মনোয়ারা বেগম নামের পরিচয়পত্রটিই দেওয়া আছে। যে কারণে আমি নাজমা খাতুন নামের পরিচয়পত্রটি বাতিলের আবেদন করেছি।
মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো: কবীর আহমেদ বলেন, নাজমা খাতুন ও মনোয়ারা বেগম নামে দুটি জাতীয় পরিচয় করা ব্যক্তি একজনই। নাজমা খাতুন নামের জাতীয় পরিচয় পত্রটি অনেক আগে করা হয়েছে এবং মনোয়ারা বেগম নামেরটি পরে করা হয়েছে। যা প্রতারণার শামিল। তিনি নাজমা খাতুন নামের পরিচয় পত্রটি বাতিল করার আবেদন করেন এবং দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র করেছেন মর্মে স্বীকার করেছেন। সে হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী অপরাধে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। বিষয়টি উপজেলা কমিটিকে জানানো হয়েছে কমিটি পরবর্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন। এছাড়া তার প্রথম পরিচয় পত্রটিই বলবৎ থাকবে, দ্বিতীয়টি বাতিল হবে।