একুশে বইমেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেমের নাট্যগ্রন্থ ‘এ সমাজ ভাঙতে হবে’

একুশে বইমেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেমের নাট্যগ্রন্থ ‘এ সমাজ ভাঙতে হবে’

অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা, কবি ও শিক্ষক আবুল কাসেমের নাট্যগ্রন্থ ‘এ সমাজ ভাঙতে হবে’। এ নাট্যগ্রন্থটির ভূমিকা লিখেছেন স্বনামখ্যাত নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিালক লিয়াকত আলী লাকী।

নাটক সমাজের দর্পণ, সমাজ বদলের হাতিয়ার। এই বইয়ের নাটকগুলোও সেই দর্শনই বহন করে। বস্তুত, আপামর শিল্পপ্রাণ লেখক আবুল কাসেমের এ নাট্যগ্রন্থের নাটকগুলোতে শৈল্পিক নিরিখে ফুটে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের চরম বাস্তবতার নানাদিক-নানাপ্রসঙ্গ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেম তাঁর এ গ্রন্থটির মধ্য দিয়ে সমাজ পরিবর্তনের অঙ্গীকার, নতুন সমাজ গড়ার স্বপ্ন ও স্বাধীনতার চেতনা অবগাহনে আলো ফেলেছেন। চারটি নাটকে সজ্জিত এ নাট্যগ্রন্থটি তাঁর প্রথম বই। নাটকগুলো হলো— পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির পুনরুত্থানের প্রেক্ষাপটে রচিত ‘মীর জাফরের পদধ্বনি’; স্বাধীনতার বীর সেনানী মুক্তিযোদ্ধাদের নিগৃহীত-নিষ্পেষিত হওয়ার বিয়োগাত্মক অ্যাখান ‘বুকের রক্তে লালিত স্বাধীনতা’; যৌতুকের করাল গ্রাসে নিমজ্জিত সমাজের চিত্র ‘যৌতুক’ এবং গ্রামীণ সমাজ-সংস্কৃতির ভালো-মন্দ নিয়ে রচিত নাটক ‘কালো মানিক’।

বইটি প্রকাশ করছে প্রকাশনা সংস্থা ‘পুথিনিলয়’। প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী চারু পিন্টু। মূল্য ৪৫০ টাকা। পাওয়া যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলার পুথিনিলয়’-এর প্যাভিলিয়নে (প্যাভিলিয়ন নম্বর ৩৪)।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবুল কাসেম একাধারে নাট্যকার, আধ্যাত্মবাদী কবি, গল্পকার ও রাজনীতিবিদ। এর পাশাপাশি তিনি একজন নাট্য ও যাত্রাপালা নির্দেশক, পরিকল্পক ও প্রযোজক। ত্যাগী ও কষ্টসহিষ্ণু মানুষটি বাংলাদেশের প্রান্তিক অঞ্চলে বাস করেও শিল্প-সাহিত্য ও দেশের জন্য নীরবেই অবদান রেখে চলেছেন।

১৯৫১ সালের ১৪ জানুয়ারি অবিভক্ত বাংলার নদীয়া জেলার তেহট্ট মহকুমার জিৎপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন নাট্যকার আবুল কাসেম । স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী মুজিবনগর ও মেহেরপুর শহরের অদূরের রাধাকান্তপুর গ্রামে শৈশব থেকে তিনি বসবাস করছেন। এ গ্রামের স্কুলেই তার লেখাপড়া শুরু। ছাত্র জীবনে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশমাতৃকার টানে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। তিনি মেহেরপুরে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে অধ্যয়ন শেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালল থেকে দর্শনের ওপর একাডেমিক পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। এরপর পেশা হিসেবে শিক্ষকতা বেছে নেন।

আবহমান গ্রামবাংলার সংস্কৃতির অসাম্প্রদায়িক চেতনার একজন উদার ও সাদামনের মানুষ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে এলাকায় সর্বাধিক পরিচিতি পান। এই সময়ে নিজ গ্রাম ও অঞ্চলের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে নাটক নির্মান এবং দেশীয় ঐতিহ্যের অন্যান্য উপাদান ‘যাত্রা’ শিল্পের নির্দেশক হিসেবেও দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। সমাজ সংস্কারেও তাঁর ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।