
মেহেরপুর প্রতিদিনে সংবাদ প্রকাশের পর অভিযুক্ত এনজিও সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট কমিটির (এসডিসি) বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন।
মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: খাইরুল ইসলাম মেহেরপুর প্রতিদিনকে তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অভিযোগকারীদের সাথে কথা বলা হয়েছে, তাদের কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হয়েছে।
এদিকে, অভিযোগকারী রোকেয়া খাতুন ও তার স্বামী কাজী মঈন উদ্দিনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের এখনো নতুন ঋণ দেওয়া হয়নি। অথচ সংবাদ প্রকাশের কয়েকদিন আগে এসডিসির মেহেরপুর শাখার ব্যবস্থাপক জিনারুল ইসলাম বলেছিলেন, সপ্তাহখানেক পর তাদের ঋণ দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ নভেম্বর মেহেরপুর প্রতিদিন ছাপা ও অনলাইন সংস্করণে এসডিসির বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। প্রকাশিত সংবাদ পাঠকদের জন্য পুনরায় তুলে ধরা হলো।
মেহেরপুরের বাড়াদী বাজারের ব্যবসায়ী রোকেয়া খাতুন সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট কমিটি (এসডিসি) মেহেরপুর শাখার বিরুদ্ধে ঋণ প্রদানে অনিয়ম, জোরপূর্বক পণ্য বিক্রি ও প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন।
বিষয়টি নিয়ে তিনি সম্প্রতি মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একটি লিখিত অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।
অভিযোগে রোকেয়া খাতুন উল্লেখ করেন, তিনি গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে এসডিসি মেহেরপুর শাখা থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। তবে ঋণ নেওয়ার শর্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা তাকে বাধ্যতামূলকভাবে একটি টেলিভিশন ও একটি ওয়াটার হিটার কিনতে বলেন। পণ্য দুটির মূল্য ধরা হয় ৫৪ হাজার টাকা, যা বাজারদরের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে বেশি বলে দাবি তার।
ঋণমূল্য ও পণ্যমূল্য মিলিয়ে তার নামেই মোট ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঋণ দেখানো হয়।
রোকেয়া খাতুন অভিযোগ করেন, এসডিসির ম্যানেজার জিনারুল ইসলাম তাকে আশ্বাস দেন ঋণের টাকা সুদসহ অগ্রিম পরিশোধ করলে তাকে পুনরায় নতুন লোন দেওয়া হবে। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে তিনি ধার-দেনা করে নির্ধারিত সময়ের আগেই ঋণের পুরো টাকা পরিশোধ করেন।
কিন্তু টাকা পরিশোধের দুই মাস অতিক্রান্ত হলেও তাকে নতুন লোন দেওয়া হয়নি। বরং বিভিন্ন অজুহাতে সময় ক্ষেপণ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
এর ফলে তার ব্যবসায়িক কার্যক্রমে মারাত্মক ক্ষতির সৃষ্টি হয়েছে তিনি অভিযোগে করেছেন।
এদিকে, এ অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন এসডিসির মেহেরপুর কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি গ্রাহককে ঋণ দেওয়ার সময় কোন না কোন ইলেকট্রিক পণ্য জোর করে দেওয়া হচ্ছে। অফিসের একটি কক্ষ শুধুমাত্র এসকল মালামালের স্টোর হিসেবে রাখা হয়েছে।
এসডিসির মেহেরপুর শাখার ম্যানেজার জিনারুল ইসলামের কাছে ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়ার সাথে এ ব্যবসা করার কোন অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এমনকি একদিন পর লাইসেন্স সহ কাগজপত্র মেহেরপুর প্রতিদিন অফিসে পৌছে দেওয়ার কথা দিলেও তিনি তা দেননি।
এ ব্যপারে মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম বলেন, এসডিসির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


