এসি ল্যাণ্ড শুন্য জেলা

মেহেরপুরের তিন উপজেলাতেই এসি ল্যাণ্ড (সহকারি কমিশনার, ভূমি) দীর্র্ঘদিন যাবৎ শুন্য থাকায় খারিজ, নামজারিসহ ভুমি সেবায় ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়াও কানুনগো, সার্ভেয়ারসহ অনেক পদে লোকবল শুন্য রয়েছে।

বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে এসি ল্যাণ্ডের পদায়ন দেওয়া হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধিনে চলে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন। অথচ মেহেরপুরের এই তিনটি গুরত্বপূর্ণ অফিসার পদায়ন হচ্ছে না দীর্ঘদিন।

জেলার তিন উপজেলার ২০টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার প্রায় ৬ লাখ মানুষ ভূমি সংক্রান্ত সেবা থেকে এখন অনেকটাই বঞ্চিত। নামজারি জমা খারিজের অভাবে অনেকেরই জমি বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে আছে।

এসিল্যান্ড অফিসের কয়েকজন জানান, কর্মকর্তা না থানায় খারিজ, নামজারি, জমা খারিজের জন্য আবেদনের ফাইল স্তূপ হয়ে জমে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ জনগণ।

সূত্র মতে জানা গেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি), মো: আবু সাঈদ বদলি হয়েছেন জুন মাসের শেষ দিকে। সদর উপজেলা ভূমি অফিসের চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে এই পদটি শুন্য রয়েছে।

গাংনী উপজেলার এসিল্যান্ড নাজমুল আলম বদলি হয়েছেন আগষ্ট মাসের শেষ দিকে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে গাংনী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পদটি ফাঁকা হয়েছে।

এছাড়া, মুজিবনগর উপজেলার তৎকালিন এসিল্যান্ড নাজমুল আলম বদলি হয়েছেন ২০২১ সালের ১ জুলাই মাসে। ঐতিহাসিক মুজিবনগর উপজেলায় ভূমি অফিসে এসিল্যান্ডের পদটি ফাঁকা রয়েছে প্রায় ২ বছর ফাঁকা রয়েছে।
সহকারি কমিশনার (এসিল্যাণ্ড) শুণ্য থাকায় এসব অফিসের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন স্ব স্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

মুজিবনগরের সোনাপুর গ্রামের হোসেন আলী, জয়পুর তারানগর গ্রামের জামিরুল ইসলামসহ কয়েকজন জানালেন, প্রায় ৫ থেকে ৬ মাস আগে নামজারি জমা খারিজের আবেদন করেও এখন পর্যন্ত জমির নামজারি জমা খারিজ করতে পারেননি। কবে নাগাদ জমা খারিজ হবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না ওই অফিসের কেউ।

গাংনীর সহড়তলা গ্রামের আবু বক্কর জানান, ভূমি অফিসার না থাকায় আমার জমির নামজারি করতে পারছিনা। সেবা নিতে এসে আমার মত অনেকেই এখন বেকায়দায় পড়েছেন।

গাংনী এসি ল্যাণ্ড অফিসের প্রধান সহকারী জালাল উদ্দিন জানান, গাংনী উপজেলায় প্রতি মাসে প্রায় ১১শ থেকে ১২শ আবেদন পড়ে খারিজের জন্য। এই মাসে এসি ল্যাণ্ড স্যার না থাকায় সব খারিজসহ সকল ভুমি সেবা বন্ধ হয়ে পড়েছে।

দীর্ঘদিন থেকে এসিল্যান্ডের পদটি শুন্য থাকায় অনেক ফাইল আটকে আছে। ভূমি অফিসগুলোতে কিছুদিন থেকে ভূমি সংক্রান্ত বহু মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না। জমির নামজারি জমা খারিজের কয়েক হাজার আবেদন জমে আছে অফিসে।এগুলো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার স্বাক্ষর না হওয়ায় আবেদনকারীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান বলেন, এসিল্যান্ডের শূন্য পদ পূরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এটা আমার এখতিয়ারভূক্ত নয়। বিভাগীয় কমিশনার বদলি করে থাকেন। এছাড়া জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীও বিষয়টি জানেন। তিনি বলেন শুধু এসিল্যান্ড নয়, কানুনগো ও সার্ভেয়ারের পদ শুন্য থাকায় সেবাগ্রহিতাদের কাঙ্খিত সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা।

তবে এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন এমপির মোবাইলে যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।