
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার প্রতিবাদে এবং ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে মেহেরপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জুলাই ঐক্য।
আজ শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর জেলা মডেল মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ মোড়ের জুলাই শহীদ স্মৃতি স্তম্ভের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এসময় তারা ‘হাদি ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে?’ ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘আপোস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ স্লোগান দেয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির তাজউদ্দিন খান, এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সূরা কমিটির সদস্য ও সেক্রেটারি মো. ইকবাল হুসাইন, জেলা রাজনৈতিক সেক্রেটারি রুহুল আমিন, সদর উপজেলা আমির সোহেল রানা, পৌর আমির সোহেল রানা ডলার, সদর উপজেলা সেক্রেটারি জাব্বারুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির তাজউদ্দিন খান বলেন, আমাদের শহীদ ভাইকে যারা হত্যা করেছে তারা ভারতে লুকিয়ে আছে। তাহলে কি আমরা এটা বুঝে নেব বাংলাদেশকে করদ রাজ্যে পরিণত করার জন্য, এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নষ্ট করার জন্য ভারত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের ওপর এই খুন-গুম চালিয়েছে ও চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রশাসন আমাদের দৃষ্টিতে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, আমাদের সঙ্গে যারা সম্পর্ক রাখছে তাদের বিনা মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, অথচ যারা পরিকল্পিতভাবে মেহেরপুরকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ বলেন, আমরা প্রথম থেকেই ভারতের হেজিমনির বিরুদ্ধে কথা বলে এসেছি। আমরা বলেছি, বাংলাদেশে ভারতের আর কোনো স্ট্যাবলিশমেন্ট থাকতে পারবে না। বাংলাদেশে তারা এই মুজিব ও হাসিনাকে রেখে গিয়েছিল মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার জন্য। সেরকম কোনো প্রসেস বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না।
প্রথম থেকেই তারা আমাদের ওপর বিভিন্ন আক্রমণ করার চেষ্টা করেছে। সর্বশেষ আমাদের সহযোদ্ধা ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ করা হয়েছে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, গুলি করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুনি বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর ২০২৫) দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা অবস্থায় শরীফ ওসমান হাদিকে মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয় এবং সেখানে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।