কবিগুরুর জন্মবার্ষিকীতে শিলাইদহে রবীন্দ্রমেলার আয়োজন

কবিগুরুর জন্মবার্ষিকীতে শিলাইদহে রবীন্দ্রমেলার আয়োজন

বাংলাভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষের নায়ক, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মবার্ষিকী আজ। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নোবেল বিজয়ী এই বাঙালি কবিকে স্মরণ করবে তার অগণিত ভক্ত।

কবিগুরুর ১৬২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কবির স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়ি আঙিনায় শুরু হয়েছে তিনদিনের রবীন্দ্রমেলা ও আলোচনা অনুষ্ঠান।

শুধু দুই বাংলার বাঙালিই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাংলা ভাষাভাষীরা কবির জন্মবার্ষিকীর দিবসটি পালন করবে হৃদয় উৎসারিত আবেগ ও পরম শ্রদ্ধায়। এবার জন্মবার্ষিকী উদযাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘সমাজ সংস্কার ও রবীন্দ্রনাথ’।

এ উপলক্ষ্যে গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠানের উদ্ধোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।

এসময় তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনাদর্শ ও তাঁর সৃষ্টিকর্ম শোষণ-বঞ্চনামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে চিরদিন বাঙালিকে অনুপ্রাণিত করবে। তিনি বাঙালির চেতনা ও মননের প্রধান প্রতিনিধি। বাংলা সাহিত্যের প্রায় সব শাখাতেই তিনি নির্দেশকের ভূমিকা রেখেছেন।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ী, কাচারিবাড়সিহ তাঁর সকল স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টার অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান, সাধারন সম্পাদক আজগর আলীসহ প্রশাসন, রবীন্দ্র গবেষক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের কণ্ঠে সুচনা সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।

এদিকে, তিন দিনব্যাপী রবীন্দ্রমেলাকে ঘিরে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি আঙিনা হাজারো দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। প্রসঙ্গত, ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ এপ্রিল কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্ম বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। তিনি চির নতুনের কবি, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের কবি। বাঙালির আত্মিক মুক্তি ও সার্বিক স্বনির্ভরতার প্রতীক, বাংলাভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষের নায়ক তিনি। কুষ্টিয়া শহর থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ কুঠিবাড়ি। পদ্মা নদীর তীরবর্তী ছায়াশীতল ও নিরিবিল পরিবেশ থাকার কারণেই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বারবার ফিরে আসতেন তার স্মৃতিধন্য এই কুঠিবাড়িতে। এখানে বসেই তিনি রচনা করেছেন কালজয়ী অনেক কাব্যগ্রন্থ, ছোট গল্প, নাটক ও উপন্যাস। বছরজুড়ে এ কুঠিবাড়িতে দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই থাকে। তবে কবিগুরুর জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রভক্তদের মনে যেন আলাদা মাত্রা যোগ হয়।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে এবং ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ কলকাতার জোড়াসাঁকোর এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কালজয়ী এ কবি জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে মহর্ষী দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘর আলো করে আসেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোট গল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়।