করোনা ক্রান্তিকালে নিম্মবিত্ত-মধ্যবিত্তদের ভরসা কি?

‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’। সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘হে মহাজীবন’ কবিতার এই লাইনটি আজ নিম্ববিত্ত-মধ্যবিত্তের চিরচেনা রুপে পরিণত হয়েছে।

চাকরি হারানো, আয় কমে যাওয়া, দ্রব্যমূল্যর লাগামহীন বৃদ্ধিতে দিশেহারা বিশেষ করে নিম্মবিত্ত-মধ্যবিত্তরা। কোভিড-১৯ এর প্রকোপ কমে গেলেও এই ক্রান্তিকালে হারিয়েছে তারা অনেক কিছুই। জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছেই, কিন্তু আয় বাড়ছে না। আবার অনেকের আয় একেবারেই কমে গেছে। এই পরিস্থিতি যারা ভবিষ্যৎ ভাবনায় যা সঞ্চয় করেছিলেন সেটিও ভাঙতে হচ্ছে। সঞ্চয় ভেঙে নিত্য দিনের সাংসারিক চাহিদা মেটাতেও হিমশিম খাচ্ছেন।

বাংলাদেশে ট্রেড কর্পোরেশন-টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, এক বছরে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলোর মধ্যে চালের দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ, পেঁয়াজের দাম এক মাসে বেড়েছে কয়েকগুণ। টিসিবি মনিটরিং করে ৫২টি পণ্য। তার মধ্যে ৩৫টি পণ্যরই দাম বেড়েছে এক মাসের মধ্যে। যা মানুষের জীবন যাত্রার ব্যয়ের ওপর গুরতর প্রভাব ফেলেছ।

এর মধ্যে আছে এনজিও ও ব্যাংক ঋণের বোঝা। ব্যাংক গুলো করোনাকালে সরকারি নির্দেশ মেনে কিস্তি আদায় বন্ধ রাখলেও এনজিও গুলো চুপিসারে তাদের নিয়োজিত কর্মীবাহিনীদের দিয়ে প্রতিনিয়ত চাপ দিয়ে ঋণের কিস্তি আদায় করেছে। এ ধরণের সংবাদও মাঝে মাঝে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেতে দেখা গেছে।

এ অবস্থায় নিম্মবিত্ত-মধ্যবিত্তরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন। সন্তানদের লেখাপড়া করানো, নিজেদের সাংসারিক চাহিদা মেটানো দুস্কর হয়ে পড়বে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যর লাগাম টেনে না ধরলে পরিস্থিতি আরো ভয়ানকের দিকে যাচ্ছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন, বাজার মনিটরিংয়ে দায়িত্ব প্রাপ্তদের এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। বাজার মনিটরিং জোর দার করতে পারলে অন্তত অল্প আয়ের এসব মানুষগুলো তাদের সাংসারিক চাহিদা মিটিয়ে ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দূর করতে পারবে।