কুমারখালীতে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে দর্জির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পুতুলের জামা বানিয়ে দেওয়ার কথা বলে ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে হানিফ দর্জি (৪৮) নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

রোববার দুপুরে কুষ্টিয়া জেলার ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন। এ সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হানিফ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে থাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

দণ্ডপ্রাপ্ত আবু হানিফ ওরফে হানিফ দরজি জেলার কুমারখালী উপজেলার হাবাসপুর গ্রামের সোলাইমান ওরফে শলক মোল্লার ছেলে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া জেলার ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম।

মামলার নথি এবং আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই শিশুটি দরজির দোকানের সামনে খেলা করছিল। সেখানে শিশুটিকে পুতুলের জামা বানিয়ে দেওয়ার কথা বলে দোকানের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণ করেন আবু হানিফ ওরফে হানিফ দরজি।

এ সময় শিশুটি অসুস্থ হয়ে কান্নাকাটি করলে, কাউকে কিছু না জানানোর জন্য শিশুটিকে ভয় দেখান হানিফ। কিন্তু বাড়ি ফিরে শিশুটি তার মায়ের কাছে বিষয়টি খুলে বলে। তাৎক্ষণিক তার মা অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।

আরও জানা যায়, এ ঘটনার দিনই শিশুটির বাবা বাদী হয়ে আবু হানিফকে আসামি করে কুমারখালী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদুর রহমান আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আদালতে মামলার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে এবং ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম বলেন, কুমারখালী থানায় দায়ের করা ৯ (১) / ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ ধারায় মামলায় শিশু ধর্ষণের অভিযোগ সাক্ষ্য ও শুনানি শেষে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।

এ অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে একমাত্র আসামি আবু হানিফ ওরফে হানিফ দরজিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডসহ ১ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। উক্ত টাকা ভুক্তভোগীর ক্ষতিপূরণ হিসেবে গণ্য হবে বলে উল্লেখ করেন আদালত।