কুমারখালীতে ৫ স্ত্রীর মধ্যে ৩ স্ত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে স্বামী গ্রেফতার

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে একাধিক বিয়ের হোতা রবিউল আলমের বিরুদ্ধে চতুর্থ স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা ও সহায়তা করার অপরাধে মামলা হয়েছে।

রবিবার ভোররি দিকে কুমারখালী উপজেলার হলবাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এরআগে, শনিবার নিহত মৌসুমি খাতুনের পালক পিতা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় শিশু ও নারী নির্যাতন দমন আইনে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করে।

মামলার এজাহারে জানা যায়, শিলাইদহ ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের মৃত শাজাহান প্রামাণিকের ছেলে রবিউল আলম ২ বছর পূর্বে কলেজে পড়াকালীন মৌসুমি খাতুনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন। এবং বিয়ের পর থেকেই মৌসুমিকে যৌতুকের দাবীতে শারীরিক ও মানুষিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন। রবিউল আলম, তার মা ভানু খাতুন, চাচা আহমদ আলী রেনু ও বোন শাহিদা খাতুন ৫ লাখ টাকা যৌতুকের দাবীতে তার উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকলে গত ৩০ ডিসেম্বর বিকেলে মৌসুমি খাতুন ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান জানান, রবিউল আলম সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে শিশু ও নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। রোববার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার প্রধান আসামি রবিউলকে কুমারখালী হলবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

এদিকে গত ৩১ ডিসেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় রবিউলের চতুর্থ স্ত্রী মৌসুমীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মৌসুমী শহিদুল ইসলামের পালিত মেয়ে ছিলেন।

কলেজে পড়াশোনার সময় তাকে প্রেম করে বিয়ে করেন রবিউল। মৌসুমীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শিলাইদহ ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের রবিউল আলম এর এমন বিয়ে কাণ্ডে তার পরিবারের সদস্যরাও বিব্রত। জানা গেছে রবিউল আলম ১৬ বছর আগে ২০০৪ সালে প্রথম বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ির পর কল্যাণপুরের সাকিরের মেয়ে জোসনা কে বিয়ে করেন। নির্যাতন সইতে না পেরে জোসনা একটি ছেলে সন্তান রেখে আত্মহত্যা করেন। বর্তমানে ছেলেটির বয়স ১২ বছর।

এর এক বছরের মাথায় রবিউল দয়ারামপুর গ্রামের সাজাইয়ের মেয়ে মনিরাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন। তবে তাদের সংসার বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। অন্তঃসত্বা অবস্থায় আত্মহত্যা করেন মনিরা। তারপর গত দুই বছর আগে পালক কন্যা মৌসুমিকে বিয়ে করেন।

এরই মাঝে গোপনে রাজিয়া সুলতানা নামে আরেক তরুণীকে বিয়ে করে শহরে বসবাস করেন রবিউল। চতুর্থ স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর পর পালিয়ে যান রবিউল। রবিউল আলম এর বড় ভাই রানা বলেন এ ধরনের কর্মকাণ্ডে আমরা বিব্রত। তবে একাধিক বিয়ের বিষয়ে তার ভাইয়ের পাশাপাশি মেয়ে পক্ষও দায়ী বলে উল্লেখ করেন তিনি।