কুষ্টিয়ার চরাঞ্চলে বাদাম চাষে ফলন ভালো, দাম নিয়ে হতাশা চাষীরা

অনাবাদি পদ্মা চরে চিনা বাদাম চাষে ভালো ফলন পেয়েছেন কুষ্টিয়ার চাষীরা। পদ্মার বিস্তীর্ণ চরে চাষকরা সোনালী ফসল বাদাম ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

পদ্মার চর ঘুরে দেখা গেছে, কুষ্টিয়ায় এ বছর প্রায় একহাজার হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে দৌলতপুরের বিস্তীর্ণ চরে চাষ হয়েছে ৮২০ হেক্টর জমিতে। একসময় পদ্মা নদীতে জেগে ওঠা বালুচর পড়ে থাকতো। যা চাষীদের কোনো কাজেই আসতো না।

এখন জেগে ওঠা পদ্মার চরে চাষীরা চিনা বাদাম চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ায় এ অর্থকরী ফসলের চাষ পুরো চরে ছড়িয়ে পড়েছে। এবছরও চরে বাদাম চাষ করে চাষীরা ফলন ভালো পেলেও দাম নিয়ে রয়েছে হতাশা।

প্রাকৃতিক দূর্যোগ আম্পানের প্রভাবে ফলনে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। তারপরও খরচ বাদ দিয়ে লাভের মুখ দেখবেন বলে জানালেন দৌলতপুর উপজেলার মুন্সিগঞ্জের আব্দুল জব্বার ও কাবিল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন চরাঞ্চলের চাষী।

ফিলিপনগর এলকার ইসমাইল হোসেন নাম এক বাদাম চাষী জানান, এবছর ১০ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছেন। বিঘা প্রতি তার খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা করে। বিঘা প্রতি ফলন হচ্ছে ৪ থেকে ৫ মন হারে। বর্তমান বাজার দর ২২শ’ টাকা মন হিসেবে বিক্রয় করলে বিগত বছরের তুলনায় লাভের অংশ কম হবে।

এদিকে বাদাম ক্ষেতে কাজ করে দিন মজুররাও খুশি। তারাও কৃষকের বাদাম ক্ষেতে গাছ থেকে বাদাম ঝরিয়ে প্রতিদিন যা আয় করেছেন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা যা সংসারে কাজে আসছে। এমনটাই জানালেন রহিমা খাতুন নামে এক বয়োবৃদ্ধ।

তবে সরকারি প্রণোদনার পাশাপাশি রাজস্বখাতের অর্থায়নে প্রদর্শনী প্লট ও ফলোআপ কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে চরাঞ্চলের বাদাম চাষীদের সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা এ কে এম কামরুজ্জামান।

চরাঞ্চলের যেসব জমি অনাবাদি পড়ে থাকে সেসব জমি অর্থকরী সোনালী ফসল বাদাম চাষের আওতায় আনা গেলে চরবাসীর সারাবছরের আর্থিক চাহিদা পুরণ হবে, পাশাপাশি দেশের বাদামের চাহিদা মিটবে সেইসাথে কমবে ক্ষতিকর তামাক চাষ। আর এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।