কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের মহা উৎসব চলছে। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল প্রতিদিন অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচরের নীচে পদ্মা নদী থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রলি বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। এর ফলে আসন্ন বন্যা মৌসুমে হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। সেই সাথে ধ্বস নামার সম্ভাবনা রয়েছে ফিলিপনগর-ইসলামপুর ব্লক দিয়ে নির্মিত স্থায়ী বাঁধে।
এলাকাবাসী জানায়, বৈরাগীরচর এলাকার হাম্বার খা, নাসির উদ্দিন মেম্বর, শাহীন আলী, মহিদুল মোল্লা ও শামীম হোসেন এবং হাটখোলাপাড়ার রাজা ও একসময়ের চরাঞ্চলের ত্রাস লালচাঁদ বাহিনীর ক্যাডার উজ্বলসহ ২০-২৫ জন স্থানীয় প্রভাবশালী ও সরকার দলীয় লোকজন বৈরাগীরচরের আবু বক্কর হাজীর বাড়ির নীচে, বৈরাগীরচর বাজার সংলগ্ন ও ভাদুশাহর মাজার সংলগ্ন পদ্মা নদী থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রলি বালি অবৈধভাবে উত্তোলন করে থাকে।
অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের বিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করা হলে দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসন বালি উত্তোলনকারীদের নিষেধ ও সতর্ক করেন। প্রশাসনের নিষেধ ও সতর্কতা অমান্য করে ওই প্রভাবশালী মহল অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কাজ অব্যাহত রেখেছে।
ট্রলি প্রতি ২০০ টাকা চাঁদা নিয়ে ওই প্রভাবশালী মহল প্রতিদিন শত শত ট্রলি বালি উত্তোলন করে থাকে। এতে প্রতি মাসে কমপক্ষে অর্ধকোটি টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে ওই প্রভাবশালী মহল।
বালি উত্তোলনের বিষয়ে কেউ মুখ খুললেই তাদের বিরুদ্ধে নেমে আসে জুলুম ও অত্যাচারের খড়গ এবং দেয়া হয় নানা ধরনের হুমকি। বালি উত্তোলনে চাঁদা আদায়কারী ওই মহল প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তারা বালি উত্তোলন করছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন জানিয়েছেন। তবে দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও থেমে নেই ওই প্রভাবশালী অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কাজ। করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রশাসনের অভিযান তেমন না হওয়ার কারনে বালি উত্তোলনকারী ওই মহলটি অবাঁধে ও নির্বিঘ্নে বালি উত্তোলনের কাজটি করে যাচ্ছে।
প্রভাবশালী মহলের বালি উত্তোলনের বিষয়ে দৌলতপুর ইউএনও শারমিন আক্তার বলেন, এর আগে অভিযান চালিয়ে ট্রলি জব্দ করা হয়েছে। আবারও অভিযান চালানো হবে।
এদিকে নদী তীরবর্তী ভুক্তভোগী এলাকাবাসী অবৈধভাবে বালি উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।