কুষ্টিয়ায় ৮টি অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়াসহ ৫ লাখ টাকা জরিমানা

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই ইট তৈরি করার অপরাধে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ৮টি ভাটা ধ্বংস করা হয়েছে। একই সাথে জ্বালানি খড়ি দিয়ে ইটভাটা পরিচালনার দায়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দুই ইটভাটা মালিককে ৫ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার শিলাইদহ ও যদুবয়রা ইউনিয়নে আটটি ভাটা ধ্বংস করা হয়েছে। খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী হাকিম মাসরুবা ফেরদৌসের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

তিনি জানান, নিয়মনীতি না মেনে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করায় এবং ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকায় উপজেলার শিলাইদহের কল্যাণপুরের মিরাজ শেখের মালিকানাধীন মেসার্স ভাই ভাই ব্রিকস, যদুবয়রা ইউনিয়নের আরিফুল ইসলামের মেসার্স এসআরবি ব্রিকস, ফারুখ হোসেনের মেসার্স টিজেবি ব্রিকস, আল মামুনের মেসার্স সাগর ব্রিকস, আমিরুল ইসলামের মেসার্স একেবি ব্রিকস, আনোয়ার হোসেনের মেসার্স মহুয়া ব্রিকস, মো. করিম শেখের সৈনিক ব্রিকস ও সামছুলের মেসার্স নিয়াত ব্রিকস ধ্বংস করা হয়। অবৈধ ইটভাটা বন্ধে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তর ও কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয় কর্তৃক সকালে অভিযান শুরু হয়ে সন্ধ্যায় শেষ হয়। অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করায় আটটি ইটভাটার আগুন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিভিয়ে দেন। পরে ড্রেজার দিয়ে ভাটার স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ও কল্যাণপুরের ভাটার কাঁচা ইট ধ্বংস করে দেয়া হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আতাউর রহমান, সহকারী পরিচালক কমল কুমার বর্মণসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ। অভিযানে সহায়তা করেন র‌্যাব, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

এর আগে সকালে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া এলাকার মেসার্স ডাবলু ব্রিকস কে ৪ লাখ টাকা ও বিত্তিপাড়া মেসার্স হাকিম ব্রিকসকে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিফাত উদ্দিন। এসময় পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলায় মোট ইটভাটার সংখ্যা ১৯১টি। এর মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে অনুমোদন নিয়ে মাত্র ৫০টি ইট ভাটা চলমান রয়েছে। অবশিষ্ট ১৪১ভাটার মধ্যে শতাধিক ইটভাটা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরসূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া জেলায় ১৯১টি ইট ভাটা রয়েছে। এর মধ্যে জিগজ্যাক ইটভাটা ৬২টি, ড্রাম চিমনি ইটভাটা ৩০টি ও ১২০ ফুট ফিক্সড চিমনি ইটভাটা ৯৯টি।