বাড়তি আয়ের আশায় কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ ৮টি কৃষি খামারের ৫৪৪ একর জমি লিজ দিয়েছেন। একর প্রতি যার গড় মূল্য দাড়িয়েছে ২২ হাজার ৬৪৫ টাকা।
গত বছর যার গড় মূল্য ছিলো ৩৪ হাজার ৯২৭ টাকা। এ বছর একর প্রতি গড় মূল্য কমেছে ১২ হাজার ২৮২ টাকা। এতে মোট টাকার পরিমাণ গত বছরের তুলনায় কম হয়েছে ৪৩ লাখ ৪৬ হাজার ৬৪৫ টাকা। গত বছর যারা কুমড়ার চাষ করে আর্থীক ভাবে চরম লোকশান করেছেন তারা এ বছর কুমড়ার চাষ করতেও সাহস পাচ্ছেনা। এ ঘাটতির দায়-ভার কে বহন করবে ? কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর বাড়তি আয়ের লক্ষে ৫ মাসের জন্য কুমড়া সহ স্বল্প মেয়াদি চাষাবাদের শর্ত সাপেক্ষে জমি লিজ দিয়ে থাকেন। সে লক্ষে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে চিনিকলের আওতাধীন ৮টি কৃষি খামারের ৫৪৪ একর জমি লিজ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
যার মূল্য দাড়িয়েছে ১ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ টাকা। যার মধ্যে দেয়া হয়েছে ফুরশেদপুর ৭৫ একর জমি ১৯ লাখ ৬১ হাজার ৫০ টাকা। বেগমপুর ৮৭ একর ২৩ লাখ ৩৪ হাজার ৬৮০ টাকা। আড়িয়া ১৩৩ একর ৩০ লাখ ৯৯ হাজার ৩৮০ টাকা। ঝাঝরি ৭২ একর ১৯ লাখ ৫৮ হাজার ৪৯০ টাকা। হিজলগাড়ী ৪২ একর ১০ লাখ ৫১ হাজার ২৯০ টাকা। ফুলবাড়ি ৫৪ একর ১২ লাখ ৪ হাজার ৩৯০ টাকা। ডিহিকৃষ্ণপুর ৪৮ একর ১১ লাখ ৯২ হাজার ৭৪০ টাকা ও ছয়ঘরিয়া কৃষি খামারের ৩৩ একর জমি ৫ লাখ ৯৬ হাজার ৭৯৫ টাকায় লিজ দেয়া হয়েছে। একর প্রতি যার গড় মূল্য দাড়িয়েছে ২২ হাজার ৬৪৫ টাকা করে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৮টি কৃষি খামারের ৪৭৭ একর জমি কর্তৃপক্ষ লিজ দিয়েছিলো ১ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকায়। যা ছিলো একর প্রতি যার গড় মূল্য ৩৪ হাজার ৯২৭ টাকা। গত অর্থ বছরের তুলনায় এ বছর যেমন ৬৭ একর জমি লিজ বেশি দেয়া হয়েছে সে হিসাবে মূল্য পায়নি।
গত বছরের তুলনায় একর প্রতি গড় মূল্য কম হয়েছে ১২ হাজার ২৮২ টাকা। টাকার পরিমানে যার মূল্য দাড়িয়েছে ৪৩ লাখ ৪৬ হাজার ৬৪৫ টাকা কম। চিনিকল সূত্রে জানাগেছে, জমি লিজের প্রথম টেন্ডারে কর্তৃপক্ষ গত বছরের ন্যায় দাম না পাওয়ায় লিজ বাতিল করে দ্বিতীয় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তাতেও লাভ হয়নি কর্তৃপক্ষের। নিয়ম অনুযায়ি তৃতীয় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দেয়ার কথা থাকলেও তা না করে মূল্য আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কায় ৮টি কৃষি খামারের ৫৪৪ একর জমি লিজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সে মোতাবেক লিজ প্রদানও করা হয়।
লিজ গ্রহীতারা জমি লিজ নিয়ে অনেকেই চাষাবাদ করা শুরু করেছেন। এদিকে একটি সূত্র জানিয়েছে গত বছর যারাই কুমড়ার চাষ করেছেন প্রত্যেকে মোটা অংকের টাকার লোকশান গুনেছেন। কারণ কুমড়ার চাষটি সম্পূর্ণ প্রকৃতির আবহাওয়ার উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে যে তাপমাত্রা বিরাজ করছে তা কুমড়া চাষের একেবারেই অনুকূলে না। জমি লিজ, চাষাবাদ, কুমড়ার বীজের মূল্য, সার, কিটনাশক এবং সেচ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ করার পরই তার পর ফলন্ত কুমড়া। এরপর রয়েছে বাজার দর। কোন কারণে এদিক সেদিক হলে সর্বনাশ হবে লিজ গ্রহীতাদের। গত বারের মত এবারো পথে বসতে হতেও পারে চাষিদের। তাই ঝুকিপূর্ণ কুমড়ার এ চাষে খুব হিসাব নিকাশ করে করতে হয় চাষিদের। আর ভাগ্য ভালো হলে তো লোকসানের পরিবর্তে লাভের মুখ দেখবে। কুমড়ার চাষটি সম্পূর্ণটায় প্রাকৃতিক নির্ভরশীল। লাভ যেমন আছে লোকশানের ঝুকিও অনেক বেশি। এদিকে লিজের সমুদয় টাকা কর্তৃপক্ষ পেয়েছে কি না তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। তবে টাকা পরিশোধ না পেয়ে চাষাবাদ এবং লোকশান হলে অনাদায়ি টাকা আদায় করা কর্তৃপক্ষের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য হবে বলে সচেতন মহল মনে করছেন।
এ বিষয়ে কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান বলেন গতবারের তুলনায় এবার ৪৩ লাখ ৪৬ হাজার ৬৪৫ টাকা নয়, তবে কম হয়েছে ১৫/১৬ লাখ টাকা। যা সময়ের পরিস্থিতির কারণেই লিজ দিতে হয়েছে আমাদের। যেহেতু দিন পেরিয়ে যাচ্ছিলো। বেশী সময় পেরিয়ে গেলো জমি লিজ দেয়াটা সম্ভবকর ছিলোনা।