বৃষ্টির পানির প্রবল স্রোতে ভেঙে পড়েছে কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের বাজার ঘাটে চিত্রা নদীর উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো। এতে নদীর দুই পাড়ের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এখন পারাপারের কোনো উপায় না থাকায় এলাকাবাসী স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন।
জানা যায়, ঝিনাইদহ সদর ও কোটচাঁদপুর উপজেলার অন্তত সাতটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের প্রধান ভরসা ছিল এই বাঁশের সাঁকোটি। ২০০৭ সালের দিকে গোপালপুর, হাজিডাঙ্গা, সুতি, মধুহাটি (ঝিনাইদহ সদর) এবং তালসার, ঘাগা, কুশনা (কোটচাঁদপুর) গ্রামের মানুষ স্বেচ্ছাশ্রম ও আর্থিক সহায়তায় সাঁকোটি নির্মাণ করেন।
সাঁকোটি ভেঙে পড়ায় প্রায় ১০ হাজার মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। বিশেষ করে অর্ধশতাধিক স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত পণ্য তালসার বাজারে নিয়ে আসতে পারছেন না, ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
চিত্রা নদীর অপর পাড়ের সুতী গ্রামের বাসিন্দা স্বপন পুন্ডুরি বলেন, “আমাদের এপার থেকে শিক্ষার্থীরা সাঁকো পার হয়ে ওপারের স্কুল-কলেজে যায়। কৃষকরাও পণ্য নিয়ে যান। গত এক সপ্তাহ ধরে আমরা চরম ভোগান্তিতে আছি। প্রতি বছরই এ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এর একটি স্থায়ী সমাধান জরুরি।”
তালসার গ্রামের মুদি দোকানি আসাদুল ইসলাম জানান, “টানা বৃষ্টিতে গত এক সপ্তাহ ধরে সাঁকোতে ওঠার রাস্তা ডুবে গেছে। সাঁকোটি জেগে থাকলেও রাস্তাটি ডুবে থাকায় চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না, কৃষকরাও বাজারে আসতে পারছে না।”
তিনি আরও বলেন, “সাঁকোটি আগেও কয়েকবার ভেঙে পড়েছে। তখন দুই পাড়ের মানুষ মিলে তা মেরামত করেছে। কিন্তু প্রতিবছর একই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এখনই একটি স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।”
স্থানীয় বাসিন্দা আকিমুল ইসলাম সাজু বলেন, “গত বছরও প্রবল স্রোতে সাঁকোটি ভেঙে পড়েছিল। মাসখানেক পড়ে থেকেছিল। দুই পাড়ের জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দিয়েও কাজ হয়নি। শেষমেশ এলাকাবাসীর সহায়তায় তা মেরামত করা হয়। এবারও স্থায়ী সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহারুজ্জামান সবুজ বলেন, “বৃষ্টির সময় এলেই সাঁকোটি ভেঙে পড়ে। এটা চিত্রা নদীপাড়ের মানুষের প্রতি বছরের সমস্যা। বিষয়টি নিয়ে আমরা আগেও একাধিকবার আলোচনা করেছি, কিন্তু কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এবার আবারও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবো, যাতে স্থায়ী সমাধান হয়।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী আনিসুল ইসলামের সঙ্গে এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।