
অতি বর্ষণে চারিদিকে থই থই পানি, ভরে গেছে গেড়ে গর্ত, মাটির নিচের সাপ আশ্রয়ের খোঁজে চলে আসছে মানুষের বসত ঘরে। বাড়ছে সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা। অসচেতনতা আর অবহেলায় হচ্ছে মৃত্যু।
গত ১ সপ্তাহে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা তিনজন রোগীকেই এন্টিভেনম না দিয়ে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে রেফার্ড করা হয় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। রেফার্ডকৃত তিনজনেরই মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে দুইজনই শিশু। ফলে এলাকায় দেখা দিয়েছে চরম সাপ আতঙ্ক। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোটচাঁদপুর বলুহর মাঠপাড়ার মাহতাব উদ্দিনের স্ত্রী নাছিমা বেগম (৪৫) গত মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) রাতে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
একই রাত্রে চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার পাকা গ্রামের আসিবুল হকের মেয়ে শিশু রশ্মি খাতুন (৫) কে সাপে কামড়ে দেয়। তাঁকেও কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে দ্রুত ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর পরপরই তার মৃত্যু হয়।
গত সোমবার রাতে সুতি দুর্গাপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের দুই বছর বয়সী মেয়ে শিশু সাদিয়া খাতুন রাতের খাবার শেষে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে থাকার সময় তাকে সাপে কামড় দেয়। পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই তিনটি মৃত্যুই ঘটেছে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসার পর রেফার্ড বা চিকিৎসার অভাবে। অথচ এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এন্টিভেনাম মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আশরাফুল ইসলাম। এ বিষয়ে চিকিৎসক ডা. আশরাফুল ইসলাম বলেন, এন্টিভেনাম দেওয়ার পর শতকরা দশ থেকে পনেরো ভাগ রোগীর শরীরে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
তখন প্রয়োজন হয় আইসিইউ বা নিবিড় পর্যবেক্ষণের। কিন্তু আমাদের এখানে সে সুবিধা না থাকায় জটিলতা এড়াতে রোগী রেফার্ড করে দিতে হয়।
এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমানুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, হাসপাতালে এন্টিভেনম আছে। তাহলে ১ সপ্তাহে ৩ জন মারা গেলো তাদের এন্টিভেনম দেয়া হয়েছিলো কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ফোনে কিছু বলা যাবে না। হাসপাতালে এসে তথ্য নিতে হবে বলেই ফোন কেটে দেন।