
খুলনা সিএসডি খাদ্য গুদাম থেকে আসা ৬৬ টন পচাঁ গম ঝিনাইদহ সরকারী খাদ্য গুদামে গুদামজাত করা হয়েছে। শুক্রবার দিনব্যাপি এসব পচাঁ গম ৪টি ট্রাক থেকে আনলোডের মাধ্যমে গুদামে রাখা হয়।
জানা যায়, খুলনা সিএসডির চলতি দায়িত্বে থাকা সহকারী ব্যবস্থাপক পূর্নিমা মন্ডল স্বাক্ষরিত ১৬জুলাই ৪টি ভি-ইনভয়েসের মাধ্যমে এসব পচাঁ গম ঝিনাইদহ সদর উপজেলা খাদ্য গুদামে (সদর এলএসডি তে পাঠায়। বৃহস্পতিবার ভোরে ঝিনাইদহ সদর সরকারী খাদ্য গুদামের (সদর ওসিএলএসডি) গেটে ৪টি ট্রাকে ৬৬টন পঁচা গম নিয়ে প্রবেশ করে। প্রথম জেটি-১১-১৮২৪ নম্বর ট্রাকে ২৯৫ বস্তা যার নীট ওজন ১৬.৮৭০ টন, দ্বিতীয় জেটি-১১-১২৯৬ নম্বর ট্রাকে ২৯৬ বস্তা যার নীট ওজন ১৬.৭৭৯ টন,তৃতীয় ডিএমটি-২৪-৩৭৭৯ নস্বর ট্রাকে ২৮৮ বস্তা যার নীট ওজন ১৬.৫৯০টন, চতুর্থ আরজেএমটি-১১-০৩৮১ ট্রাক নম্বরে ৩০০ বস্তা যার নীট ওজন ১৬.৬৮৬টন। প্রতিটি ভি-ইনভয়েসে লেখা ছিলো পন্যের নাম লাল গম এবং গুনগত মান ডিএসডি-থ্রি। প্রতিটি ভি-ইনভয়েসে খুলনা সিএসডির তল্লাসি ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার স্বাক্ষর ছিলো। কিন্তু গমের ভি-ইনভয়েস দেখে উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন মালের মান বুঝে নিতে গিয়ে দেখেন তা অত্যন্ত নিম্নমানের পচাঁ গম। তখন ট্রাক গুলা আনলোড না করে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করে। অফিসের মাধ্যমে খবর পেয়ে খুলনার বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যলয় থেকে একটি পরিদর্শক টিম এসে এই নিম্ন মানের পচাঁ গম ঝিনাইদহ খাদ্য গুদামে রাখার চাপ দিলে ঝিনাইদহ সদরের খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত গুদাম রক্ষক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন তা গুদামজাত করতে বাধ্য হন। এই নিম্ন মানের ৬৬ টন গম ফেরত না দিলে ঝিনাইদহের উপকার ভোগী ভোক্তা বা গ্রাহকগণ চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং আগামীতে আরো দুইশ টন গম আসার কথা সেটাও নিম্ন মানের মাল পাঠাবে বলে ধারণা করা যায়।
গাড়ীর চালক ও হেলপাররা জানায়, খুলনার বৈকালী থেকে গম লোড করার সময় তারা দেখতে পান গম পঁচা, নিন্মমানের ও ধুলায় পরিপুর্ন। যেগুলা আটা করে খাওয়ার অনুপোযী। সাধারণ মানুষকে এগুলা খাওয়ালে তার রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যাবে। যেহেতু আমরা পরিবহনের দায়িত্বে তাই কিছু বলতে পারিনি। আমার জেলা গুদামে আসারপর আপনাদেরকে জানাতে পারলাম।
এদিকে দুইদন ট্রাক আটকিয়ে রাখায় তখন ট্রাকের চালক এবং ট্রাক মালিকদের সাথে খাদ্য পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার পর্যন্ত দুদিন ট্রাক আটকিয়ে রাখার দায়ে হরিণাকুণ্ডুু ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান লিটন তার ট্রাকের ক্ষতিপূরণ দাবি করলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাক-বিতান্ডার সৃষ্টি হয়। তখন ঝিনাইদহ চেম্বার অফ কর্মাস এন্ড ইন্ডাট্রিজ এর সভাপতি ও জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনাস্থলে পৌছে উভয় পক্ষের মধ্যস্ততায় ক্ষতিপূরণের বিষয়টি মিমাংশা করেণ এবং ট্রাক থেকে মাল আনলোড করে ট্রাকগুলো ছেড়েদেন।
এবিষয়ে সদর উপজেলা খাদ্য পরদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন নিম্ন মানের গম হওয়ায় আমি ট্রাক আটকিয়ে দিয়েছিলাম, ট্রাকগুলো ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম কিন্তু বিশেষ কারণে এই গম আমার রাখতে হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত ) প্রিয় কমল চাকমা’র বলেন আমি ছুটিতে বাড়ী থাকায় বিষয়টি সম্পর্কে কিছু জানিনা। রবিবার এসে বিস্তারিত জানাতে পারবো।