গাংনীতে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি কাটায় প্রতিবেশীর দ্বিতল ভবন ধস

মেহেরপুরের গাংনীতে নজরুল ইসলাম নামের এক কলেজ শিক্ষককের খামখেয়ালিপনার কারনে প্রতিবেশী আব্দুল আলিমের দ্বিতীয় তলা ভবন ধসে যেতে বসেছে।

ইমারত নীতিমালা ও পৌরসভার ভবন আইন লঙ্ঘন করে মাটি কাটার কারনে বৃহস্পতিবার ভোরে গাংনী পৌর এলাকার ঈদগাঁ পাড়ার ঐ বাড়ির তলার নীচের অংশ ধসে গেছে। এ ঘটনায় ভবনের বাসিন্দারা আতংকিত হয়ে ভবন ছেড়ে বাইরে অবস্থান করছে।

অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পৌর মেয়র ও গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভুগী আব্দুল আলিম।

বাড়ির মালিক আব্দুল আলিম বলেন, ১৯৯৫ সালে গাংনী-হাটবোয়ালিয়া সড়কের ঈদগাঁ পাড়াতে ৩ শতক জমির উপর দ্বিতলভবন নির্মান করে বসবাস করে আসছি। হঠাৎ গতকাল বুধবার হারদী ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক ও বানিয়াপুকুর গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম তার বাড়ির সাথে বাড়ি নির্মাণের জন্য এক্সকাভেটর মেসিন দিয়ে মাটি কাটা শুরু করে। মাটি কাটতে কাটতে বাড়ির নীচ পর্যন্ত চলে আসে। বৃহস্পতিবার ভোরে বাড়ির নীচের অংশ ধসে যায়। এছাড়া ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। বাড়িটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তিনি এ ঘটনায় ক্ষতিপুরন ও দায়ি নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পৌর মেয়র ও গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে তিনি জানান।

আব্দুল আলিমের স্ত্রী জেসমিন খাতুন কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন, অনেক কষ্ট করে জীবনের সব উপার্জন দিয়ে দ্বিতল ভবন নির্মান করে বসবাস করার পাশাপাশি বাড়ি ভাড়া দিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলামের ক্ষমতার দাপটে তাদের সপ্নের ঘর ভেঙ্গে পড়েছে। তিনি অভিযুক্তের বিচারের পাশাপাশি ক্ষতিপুরনের দাবি করেন।

স্থানীয়রা জানান, প্রভাবশালী কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলাম গোপালনগর গ্রামের প্রবেশ মুখে ও পৌরসভার সীমানা পিলারের কাছে একটি সেতু রয়েছে ক্ষমতার দাপটে সেতুর মুখে প্রাচীর দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। ব্রীজ দখলের কারনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশাসন সমালোচনার মুখে পড়ে। প্রভাবশালী হওয়ার কারনে কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা।

অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, একটা ঘটনা ঘটে গেছে কি আর করার। তবে ভবনটাকে রক্ষা করার চেষ্টা চলছে।
বামন্দী ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত ষ্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইছাহাক আলী বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাটি সরেজমিন তদন্ত করার জন্য টিম পাঠানো হয়েছে। তবে ভবন যে কোন সময় ভেঙ্গে যেতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে। একারনে ভবনের বাসিন্দাদের ঘরে অবস্থান না করার জন্য বলা হয়েছে।

গাংনী পৌর মেয়র আহমেদ আলী বলেন, নজরুল ইসলাম ভবন অনুমোদনের শর্ত ভঙ্গ করেছে। আইনগতভাবে বিষয়টি দেখভাল করা হচ্ছে। অবশ্যই আইন অনুযায়ী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমি খানম বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ ভবন মালিক লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি পৌর মেয়রের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।