
অশ্লীল ভিডিও কান্ডে ভাইরাল হওয়া মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা এইচ বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সপ্না খাতুন।
আজ সোমবার দুপুরে মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, কাজিপুর গ্রামের মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে প্রধান শিক্ষক মোঃ রাজু আহমেদ ২০২২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিন তার অফিসে একা ডেকে নিয়ে নানা রকম প্রলোভনে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে হাত দেয়। বাধা দিতে গেলে মুখ চেপে ধরে খুন করে ফেলার হুমকি দিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এভাবে ১০/১১/২০২৫ সাল পর্যন্ত দিনের পর দিন আমাকে স্কুলের অফিস রুম সহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে ধর্ষণ করতে থাকে।
এছাড়া রাজু মাষ্টার তার মোবাইল ফোন থেকে তাকে ফোন করেন এবং যৌনাঙ্গ প্রদর্শন সহ বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে যৌন হয়রানী করতে থাকে দিনের পর দিন। এইভাবে আসামী আমাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে কুষ্টিয়া শহরে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করতো। শেষ ঘটনার তারিখ ও সময়ে বিয়ের কথা বলে তার অফিসে স্কুল ছুটির পরে ডেকে নিয়ে দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে একাধিক বার জোর পূর্বক ধর্ষণ করে।
নিরুপায় হয়ে ধর্ষক রাজু মাষ্টারের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৭/৯(১)/১০ ধারায় মামলা দায়ের করেছি। মামলায় তিনি ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেন।
স্থানীয় ও এইচ বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, অশ্লীল ভিডিও কান্ডে ভাইরাল হওয়া রাজু মাষ্টারের বিরুদ্ধে নানা আলোচনা-সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। অপকর্ম আড়াল করতে নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে। তার বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসী ইতোমধ্যে মানববন্ধন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে স্বারকলিপিও দিয়েছে। এঘটনায় বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ রাজু মাষ্টারকে সাময়িক বরখাস্ত করলেও দাবি উঠেছে স্থায়ী বহিষ্কারের।
এবিষয়ে কথা বলতে এইচ বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাময়িক বরখাস্ত ভাইরাল হওয়া প্রধান শিক্ষক রাজু মাষ্টারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
মামলার আইনজীবি শাহরিয়ার মাহমুদ শাওন বলেন, বিজ্ঞ মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আলী মাসুদ শেখ মামলাটি এফআইআর (নথিভুক্ত) করতে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি বানী ইসরাইল বলেন, আদালতের নির্দেশের কাগজপত্র এখনও থানায় আসেনি। আসলে মামলা রেকর্ড করে তদন্ত কার্যক্রমের পাশাপাশি আসামী গ্রেফতারে অভিযান চলানো হবে।