
মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে দীর্ঘ ২৩ কিলোমিটারজুড়ে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে মানববন্ধনের মাধ্যমে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন মনোনয়ন বঞ্চিত জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনের সমর্থকরা।
মেহেরপুর-কুষ্টিয়া মহাসড়কের শেষ সীমানা খলিশাকুন্ডি নামক স্থান থেকে শুরু হয়ে আলমপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এ মানববন্ধনে অংশ নেন হাজার হাজার বিএনপির নেতাকর্মী। নেতাকর্মীরা বলেন, বাংলাদেশে এ ধরনের ব্যতিক্রমী ও দীর্ঘ মানববন্ধন এই প্রথম এটি ইতিহাস হয়ে থাকবে।
উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপিসহ স্থানীয় নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে গতকাল শনিবার বিকেল ৩টায় মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। ব্যতিক্রমী এ মানববন্ধন গাংনী উপজেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা দাবি করেন, মেহেরপুর-২ গাংনী আসনে অযোগ্য নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে যিনি দীর্ঘ ১৭ বছর বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে ছিলেন না, মিথ্যা মামলার শিকার নেতাকর্মীদের খোঁজখবর রাখেননি। তাই এ মনোনয়ন বাতিল করে ত্যাগী, নির্যাতিত, নেতাকর্মী-বন্ধু জনপ্রিয় নেতা জাভেদ মাসুদ মিল্টনকে মনোনয়ন দিতে হবে। তাদের দাবি, মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা না করা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘ ২৫ কিলোমিটারজুড়ে এত বড় মানববন্ধন বাংলাদেশে কোনো নেতাই করতে পারেননি। এই মানববন্ধন বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি আরো বলেন, মেহেরপুর-২ গাংনী আসনে মনোনীত প্রার্থী দীর্ঘ ১৭ বছর হামলা-মামলার শিকার নেতাকর্মীদের খোঁজখবর রাখেননি, দলীয় কোনো কর্মসূচিতেও অংশ নেননি। অথচ জনপ্রিয়তা ও ত্যাগের দিক থেকে জাভেদ মাসুদ মিল্টনই যোগ্য নেতা। দ্রুত মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে তাকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
পৌর বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মেঘলা বলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একাধিকবার কারাবন্দি হয়েছেন। তাকে বাদ দিয়ে অযোগ্য নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া অগ্রহণযোগ্য। অবিলম্বে মনোনয়ন বাতিল করে জনপ্রিয় নেতা মিল্টনকে দলীয় মনোনয়ন দিতে হবে।
উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দাল হক বলেন, অসহায়, দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষের নেতা জাভেদ মাসুদ মিল্টন দীর্ঘ ১৭ বছর রাজপথে থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। সেই ত্যাগী নেতাকে বাদ দিয়ে অযোগ্য নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। দ্রুত মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমার জীবনে এই প্রথম এত বড় মানববন্ধন দেখলাম। মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার পরও হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে মিল্টনের পক্ষে এটাই প্রমাণ করে কে গাংনীর যোগ্য নেতা।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলফাজ উদ্দিন কালু বলেন, দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধৈর্য ধরুন। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যাকে সঠিক মনে করবেন তাকেই মনোনয়ন দেবেন। ধানের শীষের পক্ষে এবং ৩১ দফা বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ থাকুন।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রেজাউল হক বলেন, এই মানববন্ধন গাংনীর ইতিহাস হয়ে থাকবে। তারেক রহমানের ৩১ দফা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। ধানের শীষকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করতে হবে। মিল্টনকে ভালোবেসে আজ আপনারা যেভাবে রাস্তায় নেমেছেন তা কখনো ভুলবার নয়।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক উপজেলা ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির নেত্রী ফরিদা পারভীন, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. সুমন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব হারুন অর রশিদ বাচ্চু,
উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আমিনুল বারী মোতালেব, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কাউছার আলী, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম বিপ্লব এবং উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী।