মেহেরপুরের গাংনীতে প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের এসওপি সার জব্দ নিয়ে শুরু হয়েছে ধুঁয়াশা। অবশেষে স্থানীয়দের জোর তৎপরতায় গাংনী উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতিতে ৩৩৬০ বস্তা সার প্রাথমিকভাবে জব্দ করে গাংনী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলামের জিম্মায় রেখেছেন।
এ সময় গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসেন, উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন, গাংনী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল গাফ্ফার উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, গতরাতে কয়েকটি সারের ট্রাক ৩৩৬০ বস্তা সার মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক সড়কের গাংনী বসুন্ধরাপাড়া এলাকায় আর এ এন্টারপ্রাইজ (যার প্রোপাইটার গাংনী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম এবং পরিচালনায় বাপ্পি ও আব্দুল হালিম) গোডাউনে আনলোড করা হয়। রহস্যজনকভাবে একই গোডাউন থেকে রবিবার সন্ধার দিকে আবারও ওই সার ট্রাকে লোড শুরু করে কয়েকজন। এতে স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হলে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগসহ পুলিশসহ আইনশৃংখলাবাহিনীর সদস্যদের খবর দেন। এক পর্যায়ে মেহেরপুর জেলা প্রশাসককেও খবরটি দেন। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসেন, কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন ঘটনাস্থলে পৌছান।
এক পর্যায়ে সারগুলো নিয়ে সৃষ্টি হয় ধু¤্রজাল। পরে গাংনী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলামসহ শ্রমিক ইউনিয়নের কয়েকজন এসে জানান, এসওপি সারগুলো ঝিনাইদহ জেলার জন্য একটি তামাক কোম্পানী নিয়ে এসেছে। ওখানে সমস্যার কারনে এই গোডাউনে রাখা হয়েছে।
সারগুলো চিটাগাঙের নাফকো কোম্পানী থেকে ক্রয় করেছে একটি টোব্যাকো কোম্পানী। তবে, টোবাক্য কোম্পানীর কোনো লোক সারগুলোর কাছে আসেনি।
আর এ এন্টারপ্রাইজ একজন পরিচালক বাপ্পি জানান, আমাদের এটা রড সিমেন্টের দোকান। শ্রমিকলীগ নেতা মনিরুজ্জামান ফোন করে বলেছে সারগুলো নামবে পরে এসে কোম্পানীর লোকজন নিয়ে যাবে। তারা ভাড়া দেবে। আমার ঘর ফাঁকা ছিল। আমার ঘরে সার নামিয়েছি। আজকে তারা নিয়ে যাচ্ছে। তবে, গাড়ির চালকরা জানান, সার বোঝায় থাকলে ট্রাকের চাকা নষ্ট হয়ে যাবে এজন্য আমরা সারগুলো এখানে নামিয়ে রেখেছি। এব্যাপারে থানায় জিডি করতেও গেছি। কিন্তু থানার স্যার না থাকায় জিডি করা হয়নি।
শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা ও ট্রান্সপোর্টের এজেন্ট আক্তারুজ্জামান বলেন, এই মাল চুয়াডাঙ্গার জীবনগরে আনলোড হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কি কারণে সেখানে সার আনলোড করা হয়নি। আমাদের ফোন করে বললো গাংনীতে মাল আনলোড করে নেন। আমরা এখনো জানিনা কি কারণে মালগুলো এখানে আনলোড করেছে।
এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন বলেন, এই সারটা বৃটিশ আমেরিকান কোম্পানী এখানে নিয়ে এসেছে। আমাদের গাংনী থানার ওসি জানানোর পর ঘটনাস্থলে এসে সারটা আপাতত জব্দ করে এবং তাদের চালানের কাগজপত্র নিয়েছি। আগামীকাল সারের প্রকৃত মালিকদের আসতে বলেছি। তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে পরবর্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসনে বলেন, বর্তমানে সার নিয়ে একটি সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সারটি সংশ্লিষ্ট যারা কিনেছেন তাদের সাথে কৃষি অফিসারের কথা হয়েছে। তারা আসলে উপযুক্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি সূরাহা করা হবে।