গাংনীতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিশু ও নারী নির্যতনের অভিযোগ, কোর্টে মামলা দায়ের

মেহেরপুরের গাংনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিশু ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন গৃহবধু মাফরোজা খাতুন (৩৩)।

মাফরোজা খাতুন গাংনী পৌর এলাকার ৪ নং ওয়ার্ডের কৃষক রমজান আলির মেয়ে।

নির্যাতনের শিকার মাফরোজা খাতুন জানান, ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসের ২৪ তারিখে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার কেদারগঞ্জ গ্রামের মৃত ইছাহক আলীর ছেলে মো: আতিউল ইসলাম (৪০) এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। অভিযুক্ত আতিউল ইসলাম গাংনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

বিয়ের কিছু দিন পরেই যৌতুকের দাবিতে সে গৃহবধু মাফরোজার উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে বলে অভিযোগ করেন গৃহবধু। শিক্ষক স্বামীর দাবি পূরণে ব্যর্থ হলে নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে বলেও তিনি জানান।

গৃহবধু আরও জানান প্রায় ৬ মাস শারীরিকভাবে নির্যাতন করে গর্ভে থাকা ৪ মাসের বাচ্চা নষ্ট করে দেয়। এর পরও গৃহবধু এসব নির্যাতন সহ্য করেও শিক্ষক আলিউলের সাথে সংসার করতে থাকে বলে জানান।

এর পরও তার যৌতুকের লোভ রয়েই গেছে। যৌতুকের লোভে তার নির্যাতনের মাত্রা বাড়তেই থাকে। সর্বশেষ চলতি মাসে (০২-১১-২০১৯ ইং) সকাল ৮টার দিকে ২ কাঠা জমি লিখে দেওয়ার জন্য গৃহবধুকে ঘরের ভিতরে আটকে রাখে বলে তিনি জানান।

পরে অনেক কাকুতি মিনতি করলেও অভিযুক্ত শিক্ষক আতিউল ইসলাম তার পরিবারের লোকজন নিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে বলে গৃহ বধু অভিযোগ করেন। পরে অনেক অনুরোধ করলেও গৃহবধুকে ঐ দিনই বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে তিনি প্রাণ বাঁচাতে বাবার বাড়ি গাংনীতে চলে আসলে পরিবারের লোকজন আহতাবস্থায় গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেন।

গৃহবধু মাফরোজা খাতুন সাংবাদিকদের জানান, আতিউল ইসলাম এর আগেও ৫টি বিয়ে করেছে এবং সকলের সাথেই তিনি এমন আচরণ করেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় সে নাম মাত্র দেনমোহরে বিয়ে করে এবং তালাক দেয়।

অভিযুক্ত শিক্ষকের বিয়ের তালিকায় তার আপন মামাতো বোনরাও রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। গৃহবধু বলেন কোন বউ এর সাথে শিক্ষক ভাল আচরণ করেনা প্রত্যেকের সাথেই নাম মাত্র দেনমোহরে কাবিন করে এবং পরে বিভিন্ন তালবাহানা করে তালাক দিয়ে দেয়।

তিনি বলেন দামুড়হুদাতে বিয়ে করে ৬ মাস পরে তালাক হয়ে যায়, মানিকনগরে বিয়ে করে ১বছরের মাথায় সেখানে বিচ্ছেদ হয় এর পরে যশোরে বিয়ে করে সেখানে ৩ বছর সংসার করে এরপর কেদারগঞ্জে বিয়ে করে ১বছরের মাথায় বিচ্ছেদ হয় পরে দামুড়হুদাতে বিয়ে করে এখানেও ১ বছরের মাথায় বিচ্ছেদ ঘটানোর পর নির্যাতিত অভিযোগকারি এই গৃহবধুকে বিয়ে করে বলে তিনি জানান।

নির্যাতনের বিষয়ে মেহেরপুর কোর্টে নারী ও শিশু নির্যাতন দমণ আইনে শিক্ষক মো: আতিউল ইসলাম সহ আরও দুইজনের নামে মামলা হয়েছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক আতিউল ইসলাম বলেন, তার ঐ অভিযোগ বা কোর্টে যে মামলা করেছে সম্পূর্ণ মিথ্যার উপর করেছে। আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্য এমনকি আমার মায়ের জন্য টাকা খরচ হলে মাফরোজা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এ নিয়ে ঘটনার দিন বাকবির্তকতার এক পর্যায়ে আমার স্ত্রী আমাকে মারতে গেলে ধাক্কা লেগে পড়ে গিয়ে হয়তো আহত হতে পারে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন খোঁজ খবর নেওয়ার আগেই সে ফোনে হুমকি দেয়। একাধিক বিয়ে প্রসঙ্গে বলেন, সমাজে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এসব মিথ্যা রটনা সে করে যাচ্ছে।

-গাংনী প্রতিনিধি