গাংনীর গাঁড়াবাড়িয়াতে ব্রীজ নির্মাণের সপ্ন নিয়ে দিন গুনছে ১৫ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ

পলাশ আহম্মেদ :

মেহেরপুরের গাঁড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া খেয়াঘাটে ব্রীজ না হওয়ায় ১৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ একটি বাঁশের সেতু দিয়ে মারাত্বক ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। প্রয়োজনের তাগিদে স্থানীয়রাই বাঁশ খুটি দিয়ে সেতু তৈরি করে কোন রকমে যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছে। শত বছরের খেয়া ঘাটটি মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও আজও সুনজর পড়েনি এলজিইডি কর্তৃপক্ষের। ফলে দুটি উপজেলার (সদর ও গাংনী) মানুষের সেতু বন্ধন অধরাই রয়ে গেছে।

গাঁড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া বাঁশের সেতটিু দিয়ে দুটি উপজেলার (সদর ও গাংনী) ১৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করে থাকে। সেতুটির পশ্চিম পাশের অন্তত ১০ টি গ্রামের মানুষকে নিত্যদিন তাদের কৃষি পণ্য বিপনন, চিকিৎসা ও শিক্ষার্থীদের স্কুল কলেজে যেতে হয় পূর্ব দিকের গাঁড়াবাড়িয়া গ্রামে। পূর্ব দিকেরও ৫টি গ্রামের মানুষকে নানা কাজে যাতায়াত করতে হয় নদীর অপর দিকের গ্রামগুলোতে। এ বছর ভারি বর্ষনে বাঁশের সেতুটি পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। যার ফলে দীর্ঘ বাঁশের সেতুটি এখন দুর্বল কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে আছে। তার পরেও মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতি প্রয়োজনে সেতটিু দিয়ে পারাপার করছে। সেতুটি ভেঙ্গে গিয়ে যে কোন সময় মারাত্বক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশংকা এলাকাবাসির।

কুতুবপুর স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক আক্তারুজ্জামান লাভলু বলেন, মেহেরপুর শহর থেকে উত্তরাঞ্চলের সেতু গুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সেতু হচ্ছে গাঁড়াবাড়িয়া- হিতিমপাড়া সেতু। ভৈরব নদী খননের পর ওই সেতুর আশ পাশে কম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চারটি ব্রীজ নির্মাণ করা হলেও গাঁড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া সেতুটি আজও নির্মাণ করা হয়নি। এলজিইডি থেকে বার বার আশ্বাস দিলেও সেতুটি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসেনি কেউ ।

বাঁশের সেতু দিয়ে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীরা জানান, ব্রীজ না থাকায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বর্ষার সময় সাঁকো ডুবে গেলে অনেক দুরের রাস্তা কাথুলী ব্রীজ দিয়ে স্কুল কলেজে যেতে হয়। তাতে খরচ বেশি হওয়া সহ পড়াশুনা মারাত্বকভাবে বিঘ্নিত হয়।

কুতুবপুর স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক রেজাউর রহমান বলেন, দুই উপজেলার দু’টি ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের ছেলে-মেয়েদের উচ্চশিক্ষার জন্য এই ব্রীজ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। অথচ কম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ব্রীজ হলেও এই ব্রীজ টি আজও হলো না।

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান রানা বলেন, শত বছরের পুরাতন এই খেয়া ঘাটটিতে আজও ব্রীজ নির্মাণ করা হয়নি। ব্রীজটি নির্মাণ হলে দুই উপজেলার ১৫ টি গ্রামের মানুষ এর সুফল ভোগ করবে। ব্রীজটি দ্রুত নির্মাণের দাবি করে তিনি বলেন এঅঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ব্রীজ নির্মাণের। ব্রীজটি নির্মিত হলে শিক্ষার পাশাপাশি অর্থনেতিক উন্নয়ন হওয়ার পাশাপাশি জনগণের দুর্ভোগ কমবে।

মেহেরপুরের এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, গাঁড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া ব্রীজ নির্মাণে প্রপোজাল পাঠানো হয়েছিল। তবে ত্রুটিযুক্ত হওয়ায় তা ফিরে এসেছে। আমরা আবার সংশোধন করে প্রপোজালটি পাঠিয়ে দিব।