
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ঢেপা-পাঙ্গাসিপাড়ায় দুইটি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। গভীর রাতে একটি গোয়ালঘরের তালা ভেঙে এইড়ে ও গাভিন জাতের দুইটি গরু চুরি করেছে চোরের একটি সংঘবদ্ধ দল।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আগের মতো রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিতে হবে, এমন দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্র ও ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, গতকাল সোমবার দিবাগত গভীর রাতে মানিক মিয়ার গোয়ালঘরের তালা ভেঙে দু’টি গরু নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ভোরে মানিকের ছোট ছেলে গোয়ালে গিয়ে দেখতে পায় দরজা খোলা, আর ভেতরে গরু নেই। গোয়ালঘরে মোট তিনটি গরু ছিল। চোরেরা একটি ষাড় ও একটি গাভি গরু চুরি করে নিয়ে গেলেও বাছুরটিকে ফেলে গেছে। সকালে সবাই গিয়ে দেখে—বাছুরটি এক কোণে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে, নির্বাক চোখে তাকিয়ে আছে ফাঁকা গোয়ালের দিকে।
গরুর মালিক মানিক হোসেন বলেন, রাত ১০টার দিকে পাড়া থেকে বাড়ি ফিরে গোয়াল পরিষ্কার করে গরু বেঁধে তালা লাগাই। সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। সকালবেলা ছেলে বলে—‘বাবা, গরু নেই’। তখন দেখি তালা ভাঙা। চুরি হওয়া দুই গরুর মধ্যে একটি ষাড় ছিলো, যার বাজারমূল্য প্রায় ২ লাখ টাকা, আর গাভি গরুটির মূল্য প্রায় ৭৫ হাজার টাকা বলে দাবি করেন তিনি।
মানিকের পরিবারের সদস্যরা জানান, যত্ন করে, কষ্ট করে গরুগুলো বড় করছিলাম। এভাবে যদি চুরি হয়, গরু পালবো কিভাবে? এ ধরনের বড় ধরনের ক্ষতি সামাল দেওয়া তাদের জন্য খুবই কঠিন।
এ ঘটনায় গ্রামের মানুষের মধ্যে চরম দুশ্চিন্তা দেখা গেছে। অনেকেই রাতের ঘুম হারাম করে পাহারার প্রসঙ্গ তুলেছেন। তাদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে ভয় ও ক্ষোভের চিত্র।
সেলিম হোসেন নামের এক গ্রামবাসী বলেন, এভাবে যদি চুরি হতে থাকে তাহলে কেউই নিরাপদ থাকবে না। আবার কি আগের মতো রাতে লাঠিসোটা নিয়ে গ্রামের সবাইকে পাহারা দিতে হবে?
শফিকুল ইসলাম নামের আর একজন বলেন, কয়েক বছর আগে চোরের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় পুরো গ্রাম পালা করে পাহারা দিতাম। এখন আবার সেই দিন ফিরে আসবে কিনা, এই চিন্তায় সবাই।
ঘটনার খবর পেয়ে সকালে গাংনী থানার এস আই শিমুল হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তারা গোয়ালঘরের ভাঙা তালা, গরু রাখার স্থান ও আশপাশ ঘুরে দেখেন।
এস আই শিমুল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আশেপাশের সিসি টিভি ফুটেজ দেখে চোর সনাক্তকরার চেষ্টা চালাচ্ছি। চুরি যাওয়া গরু উদ্ধার ও চোরদের আইনের আওতায় আনার জোর চেষ্টা চলছে।


