গাংনীর যুগিরগোফা গ্রামে এক মাসে ৫০ লাখ টাকার মাছ নিধন করল দুর্বৃত্তরা

সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে নিজস্ব দেড় বিঘা জমিতে পুকুর কেটে মাছ চাষ শুরু করেছিল গাংনীর যুগিরগোফা গ্রামের যুবক আসাদুজ্জামান। প্রায় ৫০ হাজার টাকার মাছ ছেড়েছিলেন তিনি। মাছগুলো বেশ বড় হয়েছিল। হঠাত করেই দেখেন পুকুরের মাছ মারা যাচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে ভেবেছিলেন আবহাওয়ার কারণে মাছ মরে যাচ্ছে।

পরে পুকুরের পানি পরীক্ষা করে দেখা গেছে, পানিতে বিষ প্রয়োগের ফলে পুকুরের সব মাছ মারাগেছে। এতে অন্তত ৫ লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়। ঘটনাটি গেল ডিসেম্বরের ২৫ তারিখের। নিরাশ না হয়ে পুকুরের পানি সেচে নতুন ভাবে আবারো মাছ চাষ শুরু করেছেন তিনি। শুধু আসাদুজ্জামান নয় গেল এক মাসে গ্রামের ছয়জন মাছ চাষির পুকুরে গোপনে বিষ প্রয়োগে মাছ নিধন করা হয়েছে।

যুগির গোফা গ্রামের আব্দুল লতিফ জানান, গেল ডিসেম্বরের ১৭ তারিখে সকালে তিনি দেখতে পান পুকুরের মাছ মরে ভেসে উঠেছে। প্রথমে এটি পানির অক্সিজেন কমে যাওয়ার বিষয়টি মনে করলেও পরে দেখতে পান পাঁচ দিনের ব্যবধানে পুকুরের সব মাছ মরে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে অন্ততঃ ৮ লাখ টাকার।

একইভাবে গ্রামের ঠান্ডু মিয়ার ২০ লাখ টাকার, আনিছ ও ইদ্রিসের ৮ লাখ খলিল মেম্বরের ১০ লাখ ও দুলু মিয়ার ৫ লাখ টাকার মাছ বিষ প্রয়োগে মেরে ফেলা হয়েছে। পুকুরে পাহারা বসানোর পরও অতি গোপনে এ কাজটি করেছে দুর্বৃত্তরা। গ্রামের মাছ চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

মাছ চাষিরা জানান, এমনিতেই মাছের পোনা ও খাদ্যের দাম বেশি। অথচ মাছের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। তার পরও মাছ বিক্রি করে কোন রকমে পুুঁজ বাচানো সম্ভব হতো। অথচ দৃর্বৃত্তরা কৌশলে মাছ চাষিদের ক্ষতি করে পথে বসাচ্ছে। চাষিরা আরো জানান, ইতোপূর্বে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা টহলে আসার কারণে চোর বা দৃর্বৃত্তরা এসব অপকর্ম করতে সাহস পেতো না। এখন টহল না থাকায় তারা সুযোগ পাচ্ছে।

গাংনী উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমেদ স্বপন জানান, মাছ চাষ বেশ লাভজনক হওয়ায় গাংনীর যুগিরগোফা গ্রামের যুবক ও প্রবাস ফেরতরা মাছ চাষ শুরু করেন। বেশ লাভবানও হয়েছিলেন তারা। সম্প্রতি বিষ প্রয়োগে মাছ নিধনের পর অনেকেই পথে বসার উপক্রম। বিষয়টি নিয়ে মাছ চাষিদের সাথে বৈঠক করা হয়েছে। সম্মিলিতভাবে পুকুর পাহারার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেই সাথে দৃর্বৃত্তদেরকে সনাক্ত করে আইনের আওতায় নেয়ারও প্রক্রিয়া চলমান।

গাংনী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ ক্যাম্পকে বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং টহল জোরদারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।