গাংনীর সাহারবাটিতে সরকারি জমি দখল করে ঘর নির্মানের অভিযোগ

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামে জেলা পরিষদ ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি জোর দখল করে পাকা ঘর নির্মানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জনকল্যাণে ঘরটি নির্মাণ করা হচ্ছে বলে দখলকারিরা জানালেও বিদ্যালয়ের বা জেলা পরিষদের জমি কারো দখল করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন স্ব-স্ব কর্তৃপক্ষ।

জানাগেছে, গাংনী উপজেলার সাহারবাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন চারচারা বাজাস্থ সরকারি একটি জমি জোর দখল করে একটি পাকা ঘর নির্মাণ করছেন স্থানীয় যুবক টুটুল ও তার সঙ্গীরা।
এমন অভিযোগে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত রেজুলেশন দিয়েছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। বিদ্যালয়ের জমিতে কোন প্রকার অবৈধ স্থাপনা না করার দাবীও জানান তারা। এদিকে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দাবী করেছেন উক্ত জমি জেলা পরিষদের।

জেলা পরিষদের জমিতে কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়ায় ঘর নির্মাণ করছেন তারা এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। জেলা পরিষদ বা বিদ্যালয়ের জমি সে যেটাই হোক স্থানীয় জনগনের সহযোগীতায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঠিক রাখতে এ ঘর নির্মান কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন প্রশাসন।

এব্যপারে ঘর নির্মাণে নেতৃত্বদানকারী স্থানীয় যুবক টুটুল জানায়, আমরা জনগনের সেবা করি। জনসার্থে ঘরটি নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে জেলা পরিষদের কাছ থেকে অনুমোদন নেয়া হয়নি। এ জমি অনেকেই দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করে ব্যাবসা বানিজ্য করছেন । তাদেরকে কেউ বাধা দেয়নি। কিন্তু স্থানীয় কতিপয় ব্যাক্তি ব্যাক্তিগত আক্রোশে আমরা যে ঘরটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি তাতে বাধা প্রদান করেছেন। এটি পুরোটাই শত্রুতা।

সাহারবাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকলেসুর রহমান জানান, আমি লিখিত ভাবে উপজেলা প্রাথামিক শিক্ষা অফিসার কে জানিয়েছি। সেখান থেকে একটি তদন্ত করা হয়েছে। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারবোনা।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম বলেন, জেলা পরিষদের জমি ৬ ফিট। বাকি জমি বিদ্যালয়ের। তবে বিদ্যালয়ের জমিতে কেউ ঘর করতে পারবে কি পারবেনা সেটা শিক্ষা অফিস দেখভাল করবেন। তবে রাস্তা প্রসস্ত করা হলে অনেক জমি প্রয়োজন, সে ক্ষেত্রে ঘর নির্মাণ করা হলে রাস্তা প্রসস্তকরণ কাজ চরম ভাবে বিগ্নীত হবে।

অভিযোগ তদন্তকারি কর্মকর্তা মোঃ সামসুজ্জোহা বলেন, জমিটি বিদ্যালয়ের বেশ কিছু অংশ দখল করা হয়েছে। এর আগ্ওে তাদের একটি ঘর ছিল সেখানে বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ ব্যাবহার করে সরকারি অর্থ নষ্ট করেছে।

মেহেরপুর জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান তৌহিদ মুর্শেদ অতুল জানান, টুটুলের নেতৃত্বে ঘর নির্মাণ করছেন এমন অভিযোগ আমি শুনেছি। উক্ত জমি জেলা পরিষদ ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যৌথ জমি। জেলা পরিষদ কিংবা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ঘর নির্মাণ করা হচ্ছিল, আমি বিষয়টি জানতে পেরে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি । তিনি আরো বলেন টুটুল জেলা পরিষদে একটি আবেদন করেছেন কিন্তু আবেদনটি জেলা পরিষদ এখনো মঞ্ছুর করেনি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এহসানুল হাবীব জানান, আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিত্তিতে বিদ্যালয়ের জমিতে ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের জমি দখল করে ঘর নির্মাণে শুধু বাধায় নয় যাতে কেউ উক্ত জমি দখল করতে না পারে সে ব্যাপারে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে সে লক্ষ্যে তদন্ত করা হয়েছে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান জানান, সাহারবাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিছু জমি দখল করে ঘর নির্মানের কথা শুনেছি, তবে সরকারি জমিতে কেউ অবৈধ ভাবে ঘর কিংবা ব্যাক্তিগত প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করতে পারবেনা। যারা করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ গোলাম রসুল বলেন, জেলা পরিষদের জমি জোরদখল করে ঘর নির্মানের কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি আমি জেনেছি। ঘুব শিঘ্রই সার্ভিয়ার পাঠানো হবে এবং আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করে ব্যাবস্থা নেব।

-আল আমীন হোসেন, গাংনী