মেহেরপুরের গাংনী উপজেলাবাসী এখন বোমা আতংকে দিন কাটাচ্ছেন। ব্যবসায়ী ও ধনী শ্রেনীর মানুষের বাড়িতে একের পর এক বোমা চিরকুট ও কাফনের কাপড় রেখে হুমকী দেওয়ায় জনমনে তৈরী হয়েছে নতুন করে আতংক। বোমা উদ্ধারের ঘটনায় কাউকে সনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। তবে, পুলিশ বলছে দূর্বৃত্তদের সনাক্তে কাজ করছে তারা।
সম্প্রতি গাংনী উপজেলার চরগোয়াল গ্রামের একটি দোকানের সামনে থেকে হাতবোমা ও টিরকুট উদ্ধার করে পুলিশ। চিরকুটে লেখা হয় ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ফিরে আসবে, আমরা চরগোয়াল গ্রামের মানুষ। আমরা নদীর এপার ওপার আছি বিএনপির একটি লোকও যেনো গ্রাম ছেড়ে পালাতে না পারে।’ এভাবেই হুমকী সংবলিত চিরকুট লাল কসটেপ মোড়ানো হাতবোমা রেখে যায় দূর্বৃত্তরা। পরে সেটি উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া গাংনী পৌর শহরের চৌগাছা গ্রামের ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীনের বাড়ির গেটের সাথে দুটি বোমা, কাফনের কাপড়ও চিরকুট রেখে যায় সন্ত্রাসীরা।
এছাড়া এলাঙ্গী গ্রামের সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সুমনের বাড়িতে, গোপালনগরের বিএনপি নেতা রবিউল ইসলামের দোকানের সামনে বোমা কাফনের কাপড় ও চিরকুট রেখে যায়। এভাবেই চাকরীজীবী ও ব্যবসায়ীদের বাড়িতে বোমা কাফনের কাপড় ও জিবন নাশের হুমকী সম্বলিত চিরকুট রেখে হুমকী দিচ্ছে। চিরকুটে তাদের সাথে যোগাযোগের জন্য দিচ্ছে মোবাইল নম্বর।
শুধু এসব ব্যক্তি নয়, উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গত চার মাসে প্রায় ১৪ টি হাতবোমা সাদৃশ্য বস্তু উদ্ধার করে পুলিশ। যার অধিকাংশ বোমার সাথে চিরকুট ও কাফনের কাপড় উদ্ধার করা হয়। এসব ঘটনায় উপজেলাবাসির মাঝে নতুন করে তৈরী হয়েছে বোমা আতংক। এক সময়ের রক্তাক্ত জনপদ দক্ষিণ পশ্চিামাঞ্চলের মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার সর্বত্রই ছিল সন্ত্রাস কবলিত। তৎকালিন সময়ে সন্ত্রাস দমণে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ৭ টি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছিল। যার মধ্যে ৩ টি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে বোমা, কাফনের কাপড় এবং চিরকুট উদ্ধারের ঘটনায় আমরা আতংকিত হয়ে পড়েছি। পুলিশ আজো এসব ঘটনায় জড়িতদেরকে সনাক্ত ও আটক করতে পারেনি। চরগোয়াল গ্রামের বাসন্দারা জানান, বোমা ও চিরকুট আমাদের গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর সাথে জড়িতদের বের করে আইনের হাতে না দিলে আমার গ্রামের অবস্থা খুবই খারাপের দিকে যাবে।
গাংনী উপজেলা পরিষদের সাবেক নারী ভাইস চেয়ারম্যান্ আন্জুমান আরা বলেন, বিভিন্ন গ্রামের বোমা রাখছে দূর্বৃত্তরা। মানুষকে হুমাকি দিচ্ছে। এগুলিকে দ্রত দতন্ত আইনের আওতায় না আনলে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হবে।
গাংনী পৌরসভার প্রথম মেয়র সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নিহত আমিরুল ইসামের ছেলে গাংনী বাজার কমিটির সভাপতি সালাউদ্দিন শাওন বলেন. আমার বাবাকে গাংনী বাজারে বোমা মেরে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। আমরা তার বিচার আজও পাইনি।
গাংনী বাজারের ব্যবসায়ী বকুল, সাবেক চেয়ারম্যান বজলুর রহমান, মঙ্গল স্বর্নকারকে বোমা হামলায় হত্যা করেছিল সন্ত্রীনরা। বর্তমানে বোমা আতংক ছড়িয়েছে গাংনীতে। পুলিশ দ্রত তদন্ত করে দোষীদের আইনে সোপর্দ করতে হবে। তা না হলে গাংনী আবারও রক্তাক্ত জনপদে পরিনত হবে।
গাংনী থানা ওসি (তদন্ত) মো: আল মামুন-বলেন, বোমা সাদৃশ বেশ কয়েকটি বস্ত উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলি বোমা কিনা তা পরীক্ষা করে বোমাবাজ ও সন্ত্রাসীদেরকে চিহ্নিত করতে মাঠে কাজ করছে পুলিশ।