
এক মাসের ব্যবধানে গাংনী থানা থেকে মাত্র তিনশ গজ দূরে তিনটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আবারও গণডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন পথচারীর কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য মালামাল লুট করেছে ডাকাতদল।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক পৌনে নয়টার দিকে গাংনী-ধানখোলা সড়কের বিল্লাল নার্সারির কাছে হারেজ মোড়ে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় ডাকাতদের কাছে হাতবোমা ও দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্র ছিল বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
প্রায় ২০ জন পথচারীর কাছ থেকে আনুমানিক ৮০ হাজার টাকা লুট করেছে ডাকাতদল।
ভুক্তভোগী ইয়াসির আরাফাত আলীর কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা, আব্দুল হালিমের কাছ থেকে ৬০০ টাকা, শাহজামাল আলীর কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা, রেজিয়া খাতুনের কাছ থেকে ৭০০ টাকা, মিন্টু হোসেনের কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা, মহব্বত আলীর কাছ থেকে ২২শ টাকা, মিন্টু আলীর কাছ থেকে পৌনে ১০ হাজার টাকা, কুরসিয়া খাতুনের কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়াও অন্যান্যদের কাছ থেকেও অর্থ ও সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের বাড়ি গাংনী উপজেলার ধানখোলা, মহিষাখোলা ও আড়পাড়া এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানান, ৭-৮ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হঠাৎ রাস্তা অবরোধ করে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তারা পথচলতি অন্তত ২০-২৫ জনের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়। ডাকাতরা প্রায় ১০ মিনিটের মধ্যে পুরো ঘটনা ঘটিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে।
ঘটনার খবর পেয়ে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, “এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ডাকাতি। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।”
এদিকে, এমন ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাতের বেলা চলাচলকারী সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দ্রুত পুলিশি টহল জোরদার ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এলাকাবাসী জোর দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস পূর্বেও একই স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এরপর পুড়াপাড়া-জুগিন্দা রাস্তাতেও একই ধরনের ঘটনা ঘটে।
এভাবে একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় জনমনে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গাংনী থানা পুলিশের ডিএসবি (বিশেষ শাখা) শাখার অধিকাংশ সহকারী উপপরিদর্শক ও কনস্টেবলরা তাদের মূল দায়িত্ব ফেলে পলাতক আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে দেন-দরবার ও আওয়ামী লীগের দোসরদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা করে সময় কাটান। দীর্ঘদিন ধরে একই স্থানে দায়িত্ব পালন করছেন ডিএসবি শাখায় কর্মরত এই কর্মকর্তা ও কনস্টেবলরা।
বিষয়টি মেহেরপুরের পুলিশ সুপার ও জেলা বিশেষ শাখায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।