গার্ড অব অনার কী মুড়ির মোয়া?

কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠানে এক দাতা নারীকে গার্লস ইন গাইড সদস্যদের দিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রশিক্ষক মিজানুর রহমান। একই সঙ্গে বিতর্কের মুখে পড়েছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানও। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষক মিজানুর রহমানকে প্রতিষ্ঠান থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।

গত বুধবার বিকালে মেহেরপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। প্রতিষ্ঠান প্রধান দাবী করেন, এ অনুষ্ঠানের তার কোন অনুমতি নেওয়া হয়নি বা তিনি কিছুই জানেন না। তবে অনুষ্ঠানে দেখা গেছে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা ওই অনুষ্ঠানে সহযোগীতা করেছেন।

শীতবস্ত্র বিতরণের মত একটি অনুষ্ঠানে বস্ত্রদাতা নারীকে গার্ড অব অনার প্রদানকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়। কেউ লিখেছেন, বিশেষ কোন অনুষ্ঠান ছাড়া গার্ড অব অনার প্রদান করা উচিত হয়নি। কেউ লিখেছেন কম্বলের নিচে গার্ড অব অনার বন্দি, কেউ লিখেছেন একজন বিতর্কিত নারীকে কেন গার্ড অব অনার প্রদান করা হলো। আর সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানের সমালোচনা করতেও ছাড়েননি নেটিজেনরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও মেহেরপুরের বিভিন্ন সংগঠনের সংগঠকরা মেহেরপুর প্রতিদিনকেও তাদের সংক্ষুব্ধতার কথা জানান।

একটি ফেসবুক পেজে লাইভ ভিডিওতে দেখা গেছে, মেহেরপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অর্ধশত গার্লস ইন গাইডের মেয়ে ওই নারীকে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে অভিভাদন দিয়ে ক্যাম্পাসের ভিতরে নিয়ে আসছেন। পরে রাষ্ট্রিয় গার্ড অব অনারের মত করে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে এবং প্যারেড পরিদর্শন করেন। পরে তিনি মেয়েদের মাঝে শীতবস্ত্র উপহার হিসেবে সোয়েটার ও কম্বল বিতরণ করেন।

এ ব্যাপারে মেহেরপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামান বলেন, প্রতিষ্ঠানের চুক্তিভিত্তিক প্রশিক্ষক মিজানুর রহমান প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পরে আমাদের বিনা অনুমতিতে মেয়েদের দিয়ে একজন নারীকে গার্ড অব অনার প্রদান করেছেন। যা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। এর সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন সম্পর্ক নেই।

তিনি বলেন, তিনি যেহেতু মৌখিকভাবে চুক্তিভিত্তিক প্যারেড প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন। সে হিসেবে মৌখিকভাবে তাকে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। যেহেতু এ ধরণের একটি কাণ্ড তিনি ঘটিয়েছেন, যার কারণে এতে করে যদি আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্যারেডে আমাদের প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে নাও পারে, তাতেও তাকে আর প্রতিষ্ঠানে আসতে দেওয়া হবে না।

মেহেরপুর জেলা স্কাউটসের সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান বলেন, স্কাউটসে এ ধরণের গার্ড অব অনার প্রদানের কোন বিধান নেই। তারপরও মিজানুর রহমান গার্লস গাইড মেয়েদের দিয়ে এ ধরণের কাজ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ পেলে জেলা প্রশাসক স্যারের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।