ঘুমহীন প্রার্থীরা, মধ্যরাতে শেষ প্রচারণা-রবিবার ভোট যুদ্ধ

আর মাত্র একদিন পরই ব্যালট উৎসবে মাতবে আলমডাঙ্গার ১৩ টি ইউনিয়নবাসী। দীর্ঘ ৫ বছর পর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত নির্বাচন কমিশনও। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় দিন-রাত ঘুমহীন থাকা প্রার্থীরা ছুটে বেড়াচ্ছেন নগরীর আনাচে-কানাচে।

আগামি ২৮ নভেম্বর রবিবার অনুষ্ঠিত হবে আলমডাঙ্গার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। সে হিসেবে আজ শনিবার মধ্য রাত থেকে শেষ হয়েছে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। এমনকি বহিরাগতদের ছাড়তে হবে নির্বাচনী এলাকা।

সকাল থেকে আলমডাঙ্গার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ের প্রচারণায় ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন প্রার্থীরাসহ তাদের কর্মী-সমর্থকরা। হৈ-হুল্লোড়, মিছিল-শ্লোগান আর প্রচার মাইকের আওয়াজে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে প্রচারণা।

শুক্রবার বিভিন্ন ইউনিয়নের দলীয় প্রার্থীদের গণসংযোগ করেন জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা।
ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়াও ব্যস্ত সময় পার করছেন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর, সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী। বসে নেই তাদের পক্ষে বিপক্ষে থাকা কর্মী-সমর্থকরা।

এদিকে ভোটগ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কর্মকর্তারা। ভোট গ্রহণের কক্ষ থেকে শুরু করে প্রতিটি কেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করাসহ সার্বিক বিষয়ে সজাগ রয়েছে ইসি।

আলমডাঙ্গা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা এ,জি,এম মোস্তফা ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা চাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন। এজন্য বৃহৎ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আশা করছি অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবাই আমাদের সহযোগিতা করবে।

উল্লেখ্য, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১৩ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ৬৩ জন, সংরক্ষিত মহিলা প্রার্থী ১৪২ জন ও মেম্বার প্রার্থী ৪৪৮ জন অংশ গ্রহন করে। মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাই এর মাধ্যমে খাদিমপুর ইউনিয়নের মেম্বার প্রার্থী সাজাপ্রাপ্ত ও গাংনী ইউনিয়নের মেম্বার প্রার্থী অপ্রাপ্ত বয়স হওয়ায় তাদের মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

১১ নভেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিলো । মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে ১৩টি ইউনিয়নে মোট ৬৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে। তাদের মধ্যে ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহারকারী হলো- দেলোয়ার হোসেন, গাংনী ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আবু তাহের ও খাদিমপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইদুর রহমান ।
এছাড়া, সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ৪৪৭ জন। তাদের মধ্যে ১৫ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। গাংনী ইউনিয়নে সাধারন সদস্য ৩ জন, কুমারী ইউনিয়নে সাধারন সদস্য ২ জন, খাসকররা ইউনিয়নে সাধারন সদস্য ১ জন, জেহালায় সাধারন সদস্য ২ জন, জামজামি সাধারন সদস্য ১ জন, কালিদাসপুর সাধারন সদস্য ১জন, হারদী ইউনিয়নে সাধারন সদস্য ২ জন ও চিৎলা ইউনিয়নে সাধারন সদস্য ৩ জন তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।

অন্য দিকে, আতঙ্কের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা শেষ করেছে প্রার্থীরা। সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা দাবি করেন ইউনিয়ন পরিষদ সুষ্ট ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিবে ইসি। এমনটাই দাবি জানিয়ে তারা আরো বলেন, সরকারের দলীয় প্রতিক নৌকার প্রার্থীরা জোরপূর্বক ভোট কেন্দ্র দখল করবে বলে হুমকি প্রদান করছে।

আলমডাঙ্গা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে কোন অপ্রিতিকর ঘটনা যেনো না ঘটে সে কারণে কঠোর অবস্থান পুলিশ। যদি নির্বাচনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটনায় দ্রুত তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।