মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক আব্দুর রউফের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গাংনী থানা পুলিশ সে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কথিত সাংবাদিক আব্দুর রউফকে গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে আদালতে নিলে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে পল্লী চিকিৎসক আব্দুল মাবুদের ভাই শামীম বাদি হয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে গাংনী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৩৩ তারিখ ৩০/০৭/২৫ ইং।
সাংবাদিক আব্দুর রউফ সোমবার বিকালে গ্রাম্য ডাক্তার আব্দুল মাবুদের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে ২০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেন এবং পরের দিন বুধবার সন্ধ্যায় পুনরায় একই ব্যক্তির কাছে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ফোন করে আবারো টাকা দাবি করে। সন্ধ্যায় পুনরায় টাকা আনতে গেলে তাকে পরিচয়পত্র দেখাতে বলেন ভুক্তভোগীরা। এসময় সে মেহেরপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমাদের সূর্যোদয় পত্রিকার স্টাফ রিপোটার হিসেবে পরিচয়পত্র দেখান। তার কথাবার্তা অসংলগ্ন দেখে স্থানীয় জনতা আব্দুর রউফকে ধরে গণধোলাই দেয়। পরে গাংনীতে অবস্থানরত সেনাবাহিনীর খবর পেয়ে সেখানে আসলে রউফকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। পরে সেনাবাহিনী আব্দুর রউফকে গাংনী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
এঘটনা আব্দুল মামুদের ভাই মমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বুধবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
জানা গেছে, বহুল আলোচিত আব্দুর রউফ ভারত থেকে অবৈধভাবে এসে মেহেরপুর শহরের মল্লিক পাড়ায় বসবাস করছেন। তার পিতার নাম জমির উদ্দিন। পরে সে বিয়ে করে স্থায়ী হন। ইতোপূর্বে সে মল্লিকপাড়া এলাকায় সবুজ ছায়া নামে একটি ক্লিনিক খুলে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন। সে ডাক্তার না হয়েও তার নামের পূর্বে ডাক্তার যোগ করে প্রতারণা করছিলেন। পরে ক্লিনিকটিতে অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেই প্রশাসন। এরপর পরই সে সাংবাদিকের খাতায় নাম লেখান। স্খানীয় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার কার্ড নিয়ে এলাকায় দেদারছে চাঁদাবাজি করে আসছিলো। গত বছরে কুলবাড়িয়া গ্রামে চাঁদাবাজি করতে গেলে ওই ব্যবসায়ী তার বিরুদ্ধে সদও থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সে বিষয়টি নিয়ে মেহেরপুর প্রতিদিনসহ জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। তারপরেও তার চাঁদাবাজি থেমে থাকেনি। তবে এত কিছুর পর আমাদের সূর্যদয় পত্রিকার কিভাবে নিয়োগ পেল এবং পত্রিকা কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় জনসাধারণের মাঝে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
এদিকে আব্দুর রউফকে বারবার চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক করা হলেও চাঁদাবাজের গডফাদার থেকে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এলাকাবাসির দাবী চাঁদাবাজ আব্দুর রউফের গডফাদারকেও ধরে আইনের আওতায় আনা হোক।
তবে, এব্যাপারে পত্রিকাটির প্রকাশক ও সম্পাদক আবুল কাসেম অনুরাগীর মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।