
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামে পল্লী চিকিৎসকের কাছে দ্বিতীয় দফায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে আব্দুর রউফ (৫০) নামের এক কথিত সাংবাদিককে গণধোলাইয় শেষে সেনাবাহিনীর হাতে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা। ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিকবার চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গরছে।
আটকের পর আব্দুর রউফ নিজেকে মেহেরপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমাদের সূর্যোদয় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে পরিচয় দেন এবং পরিচয় পত্র দেখান।
গাংনী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতোয়ার রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগী গাংনী পৌরসভার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আব্দুল মাবুদ জানান, কথিত ওই সাংবাদিক আমার চেম্বারে গতকাল এসে সিভিল সার্জন এবং জেলা প্রশাসনের নাম করে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিশ হাজার টাকা চাঁদা নিয়ে যায়। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যাায় সে আবারো চেম্বারে আসে। এবার সে বলে, আপনাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ সিভিল সার্জন এবং ডিসি অফিসে গেছে। সিভিল সার্জনকে ঠেকাতে হলে বিশ হাজার টাকাতে হবেনা। আবারও টাকা দিতে হবে। এক পর্যায়ে সে আরও ভয়ভীতি দেখায়। এঘটনার পর আমরা গাংনীর স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে আব্দুর রউফ নামে কোনো সাংবাদিক আছে কিনা। তারা জানান, এই নামে কোনো সাংবাদিক নেই। এরপর আমরা তার কাছ থেকে পরিচয় পত্র দেখতে চাই। এক পর্যায়ে সে মেহেরপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমাদের সূর্যোদয় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টারের পরিচয় পত্র দেখান। পরে স্থানীয় জনতা তাকে গণপিটুনি দিয়ে গাংনী সেনাবাহিনীর হাতে সোপর্দ করেন।
এঘটনায় চাঁদাবাজির অভিযোগে গাংনী থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে জানা গেছে, কথিত ওই সাংবাদিক আব্দুর রউফের বাড়ি ভারতে। সে বৈবাহিক সূত্রে মেহেরপুর শহরের মল্লিকপাড়াতে বসবাস করে আসছেন। সে প্রথমদিকে নিজেকে চিকিৎসক দাবি করতেন। নিজের নামের সাথে ডাক্তার যুক্ত করে ডাক্তার আব্দুর রউফ লিখতেন। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা আদায় ও ভূয়া ডাক্তারখানা বন্ধের নির্দেশ দেন। পরে সে নিজেকে সাংবাদিক বনে যান। ২০২৩ সালে মেহেরপুর শহরের এক সার ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করে। পরে সেটি ফেসবুকে ভাইরাল হলে ওই সার ব্যবসায়ীর পা ধরে ক্ষমা চাইতে দেখা যায়। গত বছরে মেহেরপুর সদর উপজেলার কুলবাড়িয়াতে চাঁদাবাজি করেন। পরে তিনি থানায় অভিযোগ দিলে পা ধরে মাফ চান এবং টাকা ফেরত দিয়ে আসেন।
স্থানীয়রা আরও জানান, আব্দুর রউফ এলাকার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্লিনিকসহ বিভিন্ন স্থানে চাঁদা দাবী করে আসছেন। সূর্যোদয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় তিনি চাঁদাবাজীতে লাগামছাড়া হয়েছেন। বিভিন্ন অফিস-দপ্তরে গিয়ে নানা ধরণের হুমকি-ধামকি দিয়ে চাঁদা দাবী করে আসছেন। চাঁদা না দিলে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সংবাদও প্রকাশ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।