চুয়াডাঙ্গার আমিরপুরে মাদ্রাসা শিক্ষক ও বিটিভির জেলা প্রতিনিধি নারীসহ আপত্তিকর অবস্থায় আটক

চুয়াডাঙ্গার আমিরপুরে মাদ্রাসা শিক্ষক ও বিটিভির জেলা প্রতিনিধি নারীসহ আপত্তিকর অবস্থায় আটক

চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের আমিরপুর গ্রামে কামিল মাদ্রাসার কৃষি শিক্ষক ও বিটিভি এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা এবং দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি ওয়াহেদ মোঃ রাশেদীন আমিন ওরফে রাজন রাশেদ নতুন শিক্ষা কারিকুলামের প্রশিক্ষণ ফেলে নারীসহ আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয় জনতার হাতে আটক হলেও অবশেষে মোমিনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল-মামুন রতনের হস্তক্ষেপে তার মুক্তি মেলে।

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা আড়াইটার পর। এ ঘটনার আগে নতুন শিক্ষা কারিকুলামের জন্য চুয়াডাঙ্গা ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর চলমান প্রশিক্ষণে সে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। দুপুরের ১ ঘন্টার বিরতীর মধ্যে ওই শিক্ষক কিভাবে আমিরপুর গ্রামে নারীবাজী করতে আসে সেটা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

আমিরপুর গ্রামবাসী জানান,বেশ কিছু দিন ধরে ওই গ্রামের মরহুম আব্দুর রহমান ওরফে রহমান কাজী (সাবেক কামিল মাদ্রাসার পিয়ন) বাড়ীতে ওয়াহেদ মোঃ রাশেদীন আমিন ওরফে রাজন রাশেদ আসা-যাওয়া করে। ওই বাড়ীতে কাজীর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী তার এক সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছে। রাজন, দ্বিতীয় স্ত্রীকে পেনশনের টাকা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে তার সঙ্গে অপ্রতিরোধ্যভাবে শারীরিক সম্পর্ক করতো। সে খেয়াল খুশি মত এসে সেটা অব্যাহত রেখেছিল।

মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শাহিনুর রহমান শাহিন জানান, রাজন রাশেদ বেশ কিছুদিন ওই বাড়ীতে আপত্তিকর কাজ করার জন্য আসতো। এদিন দুপুরের পর লোকজন বাড়ীর প্রাচীর টোপকে ভেতরে ঢুকে ঘরের মধ্যে দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। সেখানে লোকজন রাজনকে গণপিটুনি দেয়। এমতবস্থায় সে নিজেকে বাঁচাতে ৯৯৯ ফোন দিলে বেশ কিছুক্ষণ পর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তার আগে ইউপি চেয়ারম্যান রতন তাকে ছেঁড়ে দেয়।

মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল-মামুন রতন জানান, পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শাহিন ও তারপর ইউনিয়ন যুব লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল মমিন তাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানান, আমিরপুর গ্রামের ওই বাড়ীতে অবৈধ কাজ করার সময় স্থানীয় জনসাধারণ দুজন নারী-পুরুষকে আটক করে রেখেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, অভিযুক্ত রাজন ঘরের ভেতর থেকে বের হয়ে বাড়ীর উঠানে চেয়ারে বসে আছে। বাড়ীর চারিপাশে লোক সমাগম বেড়েই যাচ্ছিল। পরবতী পরিস্থিতি বিবেচনা করে আটক রাজনের হাতে তার মোটরসাইকেলের চাবি ধরিয়ে দিয়ে আমি তাকে চলে যেতে এবং চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসির সঙ্গে দেখা করার জন্য বলি। সে তখনই সেখান থেকে দ্রুত চলে যায়। তবে স্থানীয় জনসাধারণ বলছিল, তাদের দুজনকে ঘরের ভেতর আপত্তিকর অবস্থায় আটক করা হয়। এ বিষয়টি রাজনকে জিজ্ঞাসা করলে সে কোন জবাব না দিলেও অভিযোগে দুষ্ট মেয়েটি বলে তার সঙ্গে কিছু হয়নি।

এ ঘটনার বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা কামিল মাদ্রাসার অভিযুক্ত শিক্ষক সাংবাদিক ওয়াহেদ মোঃ রাশেদীন আমিন ওরফে রাজন রাশেদ বলেন, আমি নতুন শিক্ষা কারিকুলাম প্রশিক্ষণের ফাঁকে আমিরপুর গ্রামে আমাদের মাদ্রাসার সাবেক পিয়ন মরহুম আব্দুর রহমান ওরফে রহমান কাজীর বাড়ীতে পেনশন সংক্রান্ত একটি বিষয়ে গিয়েছিলাম। হঠাৎ বন্ধ ঘরের দরজায় আমার একজন ছাত্র টোকা দেয়। আমি দরজা খুলে দিলে সে ‘সরি’ বলে চলে যায়। এরপর দেখি প্রচুর লোকজন জড় হচ্ছে। তারপর আমি সেখান থেকে চলে আসি। এর বেশী আমি বলতে পারবো না। তবে ধারনা করছি, আব্দুর রহমান ওরফে রহমান কাজীর দু’স্ত্রী। বড় স্ত্রীর একটি ইনসুরেন্স করা ছিল। সেই ইনসুরেন্সের টাকা উঠানো নিয়ে, বিরোধের কারনে আমাকে জড়িয়ে এমনটি ঘটতে পারে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ কুমার সাহা বলেন, ৮ম ও ৯ম শ্রেণীর নতুন শিক্ষা কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য এই প্রশিক্ষণ ১৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। প্রশিক্ষণের মধ্যে বেলা ১ টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বিরতী শেষে আবার সেটা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে। এর মধ্যে একজন শিক্ষক প্রশিক্ষণ চলমান অবস্থায় কি করে অন্যকোন স্থানে অপকর্ম করে সেটা ভাবতেও অবাক লাগে। তিনি বলেন, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। তবে এ ঘটনার ব্যাপারে তাকে কারন দর্শানো নোটিশ করা হবে। এটি একটি গোর্হিত অপরাধ।