চুয়াডাঙ্গায় প্রবাসীর স্ত্রীকে চেতনানাশক ঔষধ পান করিয়ে গলা কাটেন প্রেমিক মামুন

চুয়াডাঙ্গায় প্রবাসীর স্ত্রীকে চেতনানাশক ঔষধ পান করিয়ে ছুরি দিয়ে হত্যা করেছেন মামুন হোসেন (৩০)। প্রবাসী স্বামীর বাড়ি ফেরা নিয়ে পরকীয়া প্রেমিক মামুন হোসেনের সাথে মনমালিন্যের সৃষ্টি হয় জেসমিন খাতুন আয়নার।

এরই জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ভাগ্নে রাব্বিকে ব্যবহার করে শরবতের মধ্যে চেতনানশক ওষুধ মিশিয়ে আয়নাকে পান করায় মামুন। সেদিন রাতে আয়না জ্ঞান হারালে তার ঘরে ঢুকে ড্রেসিং টেবিলের ওপরে থাকা একটি ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কাটে পরকীয়া প্রেমিক মামুন।

আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমন তথ্য জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ।

এদিকে এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার প্রধান অভিযুক্ত মামুন মন্ডলসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে বারোটার সময় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চুয়াডাঙ্গা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক বলেন, জেসমিন খাতুন আয়নার স্বামী কুয়েত প্রবাসী হওয়ার সুবাদে তার সাথে প্রতিবেশী যুবক মামুন হোসেনের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

এ সম্পর্কে দাবীতে মামুন হোসেন আয়নাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বিয়েতে আয়না খাতুনের অস্বীকৃতি তাদের মধ্যে বিবাদ তৈরি হয়। এরই মধ্যে প্রবাসী স্বামী হাবিবুর রহমান হাবিলের দেশে ফেরার খবরে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মামুন হোসেন। এরই এক পর্যায়ে চালানো হয় হত্যাকান্ড।

পুলিশ কর্মকর্তা আবু তারেক আরও বলেন, মরদেহটি বিবস্ত্র অবস্থায় ঘরে পড়ে ছিল। এ থেকে আমাদের সন্দেহ- ওই নারীকে হত্যার আগে ধর্ষন করা হতে পারে। যদিও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনো পাওযা যায়নি। তাই এখনই এ বিষয়টি নিশ্চিত নয়।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঘটনার পর থেকেই মাঠে নামে পুলিশ। একদিনের মধ্যেই হত্যার রহস্য অনেকটা উদঘাটন করা হয়েছে। এ হত্যা কাজে ব্যবহৃত বেশ কিছু আলামতও জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি, চেতনানাশক ওষুধ মেশানো পানির গ্লাস, রক্তমাখা কাপড়, মোবাইল ফোন, ঘাতকের স্যান্ডেল ও লুঙ্গি জব্দ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নতুন যাবদপুর গ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পরে গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে নিহতের ভাই আব্দুর রউফ দাবী হয়ে বেশ কয়েক জনকে অজ্ঞাত আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।মামলাটি প্রক্রিয়াধীন থাকবে বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের এই দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।