চুয়াডাঙ্গা বেগমপুরের আব্বাস মেম্বরের বিরুদ্ধে কৌশলে সাদাস্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেবার অভিযোগ

চুয়াডাঙ্গার বেগমপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে কৌশলে একজনের নিকট থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেবার অভিযোগ উঠেছে।

সে স্ট্যাম্প দিয়ে নিজের খেয়াল খুশিমত লেখা লেখি করে ভুক্তোভোগি দুবাই প্রবাসি ইউনুচ আলীর নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন আদালতে। হয়রানিমূলোক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আব্বাস আলীর দৃষ্টান্তমূলোক শাস্তির দাবি তুলে গতকাল শনিবার বিকাল ৫টায় দর্শনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সন্মেলন করেছেন রেমিটেন্স যোদ্ধা ইউনুচ আলী।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের চিলমারি পাড়ার মৃত হযরত আলীর ছেলে দুবাই প্রবাসি ইউনুচ আলী সাংবাদিক সন্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে বলেন, দুবাই থেকে ৪ বছর আগে ছুটিতে বাড়িতে আসলে একই পাড়ার মৃত আবু ব্যাপারীর ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য আব্বাস আলীর শ্যালক দর্শনা পৌরসভাধীন মোবারক পাড়ার মৃত নূরবক্সের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম চঞ্চলের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ছুটে শেষকরে আমি দুবাইতে চলে যায়।

আমি প্রবাসে যাবার পর মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নানাভাবে আমার সাথে বন্ধুত্বের অধিকারের দাবি নিয়ে বিদেশ নিয়ে যাবার কথা বলে। সেই কথার সাথে একত্বতা প্রকাশ করেন আব্বাস আলী। তিনিও আমাকে তার শ্যালককে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। আমি দুবাইতে থাকা অবস্থায় সরল মনে তার এই আবদারটি রক্ষার্থে বাংলাদেশ-ঢাকাস্থ মেসার্স জিমস ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল (আরএল ০৬২৮) এজেন্সির নাম ও ঠিকানা প্রদান করি। এরপর বিগত ২০/০২/২০২০ ইং তারিখে বৈধ ভিসায় ঐ এজেন্সীর মাধ্যমে সকল প্রকার নিয়ম কানুন মেনে জাহাঙ্গীর আলম চঞ্চল সৌদি আরবে আসে এবং একটি ভালো কোম্পানীতে ভিসায় উল্লেখিত কাজে যোগদান করে। এরপর কয়েক মাস পর সে লোভে পড়ে ঐ কোম্পানী ছেড়ে নিজ ইচ্ছায় আমাকে কিছু না জানিয়ে অন্য একটি কোম্পানীতে কাজে যোগদান করে।

বর্তমানে সে সৌদি আরবের ওই কোম্পানীতেই কর্মরত আছে। পরবর্তী সময়ে বন্ধুত্বের সুবাদে তার দুলাভাই আব্বাস আলী ও বোন দু’জনে মিলে আমার নিকট থেকে জাহাঙ্গীর আলম চঞ্চলের মেয়ের বিবাহের জন্য ৭০ হাজার টাকা ধার হিসেবে গ্রহণ করে। আমি দুবাই থাকা অবস্থায় টাকা ধার দেওয়াটাই আমার অপরাধ হয়ে দাঁড়ায়। চঞ্চলের বিদেশে যাবার সকল দ্বায়ভার বা বিষয়গুলো সুচতুর, চালাক ও প্রতারক আব্বাস আলী আমার উপর জোরপূর্বক চাপিয়ে দেয়। সৌদি আরবে পৌছে চঞ্চল লোভে পড়ে ভিসা চুক্তির বাহিরে অবস্থান নেয়।

আমি দুবাইয়ে থাকা অবস্থায় ভিসা অনুযায়ি চলার অনুরোধ করলেও সে আমার কথায় কোন প্রকার কর্ণপাত করে না। বরং আমার বিরুদ্ধে নানাভাবে মিথ্যা অভিযোগ তোলে। কিছুদিন আগে ছুটি পেয়ে আমি নিজ বাড়িতে আসি। বাড়িতে এসে আমার কাছ থেকে ধার নেয়া সেই ৭০ হাজার টাকা আব্বাস আলীর নিকট থেকে ফেরত চাই। ধারের টাকা ফেরত চাওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে নানাভাবে হুমকি, ধামকি প্রদান সহ আমার খুন জখমের ভয়ভীতি দেখায়। এতে আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ি। মানুষের উপকার করলে যে এমন পরিণতি হয় তাহা আমি এখান থেকে শিখতে পারলাম।

এসকল বিষয় নিয়ে চালাক আব্বাস আলী কৌশলে নিজ শ্বাশুড়িকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা অভিযোগ দর্শনা থানায় দায়ের করেন। আমি স্বাক্ষিসহ থানায় হাজির হয়। সেখানে আব্বাস আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে জাহাঙ্গীর আলম চঞ্চল যে ভিসায় সৌদি আরবে গিয়েছে সে ভিসা নাকি অবৈধ। আমি সালিস বৈঠকে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করি এবং ভিসার বৈধ কাগজপত্র হাজির করার জন্য সময় চেয়ে নিই।

গত ৫/৬ দিন আগে মেসার্স জিমস ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল (আরএল ০৬২৮) এজেন্সি অফিস থেকে চঞ্চলের সৌদিতে যাওয়ার বৈধ সকল কাগজপত্র নিয়ে হাজির হলে জানতে পারি আব্বাস আলী মেম্বর আমার স্বাক্ষর জাল করে ৩টি সাদা স্ট্যাম্পে তার ইচ্ছামত লেখালেখি করে আমার বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা আদালতে একটি মিথ্যা, হয়রানি মামলা দায়ের করেছেন। যে মামলায় সকল স্বাক্ষীই আব্বাস মেম্বার পক্ষের লোকজনের এবং তিনিই ১নং স্বাক্ষী। এখানে গ্রামের মুরুব্বী ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের বা সঠিক ঘটনা জানা লোকজনের কোন স্বাক্ষী হিসেবে নেওয়া হয় নাই। অত্র মামলায় বর্তমানে আমি আদালতে থেকে জামিনে মুক্তি আছি।

আমি আপনাদের মাধ্যমে মিথ্যাবাদি, প্রতারক আলোচিত আব্বাস আলী মেম্বারের মুখোশ উন্মোচনের জোর দাবি জানাচ্ছি। যাতে করে আমার মত আর কাউকে মিথ্যা মামলায় দায়ের করে ফাঁসানো বা হয়রানি শিকার করতে না পারে। সেই সাথে ঘৃণীত কাজকে ধিক্কারসহ আব্বাস আলীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।