চুয়াডাঙ্গা-যশোর ও খুলনা-মেহেরপুর রুটে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ

চুয়াডাঙ্গা-যশোর ভায়া জীবননগর-কালীগঞ্জ রুটে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে যশোর ও কালীগঞ্জ মোটর মালিক সমিতি। ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর হতে প্রায় চার মাস যাবৎ সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা মালিক সমিতির বাস নিয়মিত চুয়াডাঙ্গা থেকে সরাসরি যশোর পর্যন্ত চলাচল করে থাকে। অপরদিকে কালীগঞ্জ ও যশোর মালিক সমিতির বাস যশোর থেকে ছেড়ে এসে চুয়াডাঙ্গা পর্যন্ত চলাচল করে। উভয়পক্ষের মালিক সমিতির ভেতরে দ্বন্দ্ব তৈরি হওয়ায় যশোর ও কালীগঞ্জ বাস মালিক সমিতির বাস হাসাদাহ পর্যন্ত চলাচল করছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

একই ঘটনার পর গেল ১৫ মার্চ থেকে মেহেরপুর থেকে ঝিনাইদহ হয়ে খুলনা রুটে চলাচলকারী সোহেল ও আর এ পরিবহন বন্ধ করে দেয় কালীগঞ্জ মোটর মালিক সমিতি। তবে কি কারনে বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে সে বিষয়ে এখনো জানা যায়নি।

কালীগঞ্জ মোটরমালিক সমিতি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৬ সাল থেকে কালীগঞ্জ-আলমডাঙ্গা রুটে ২৬টি ট্রিপে কালীগঞ্জ মোটরমালিক সমিতির বাস চলাচল করত কিন্তু চুয়াডাঙ্গা মিনিবাস মালিক সমিতির কর্মকর্তারা কোনও কারণ ছাড়া জোর পূর্বক ট্রিপগুলি দখল করে নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন। যার কারণে কালীগঞ্জ মিনিবাস মালিকদের চরম লোকসান গুনতে হচ্ছে।

২০১৩ সালে ঠিক এরকম অবস্থার সৃষ্টি হয়। তখন সমস্যার সমাধান হতে দীর্ঘ সময় লাগে। আবারও মালিক সমিতির দ্বন্দ্বের কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হওয়াতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

দর্শনা হতে যশোর যশোর গামী যাত্রী জিনাথ হোসেন বলেন, তিনি প্রতি সপ্তাহে কাজের জন্য যশোর যান, কিন্তু সরাসরি বাস বন্ধ থাকায় তার সময় বেশি অপচয় হচ্ছে এবং যাত্রা খরচ ও বেড়ে গেছে।
খালিশপুর থেকে দর্শনা গামী অফিস যাত্রী শাহিদ হোসেন বলেন, তিনি রেগুলার খালিশপুর থেকে দর্শনা যান অফিস করতে, সরাসরি বাস না থাকায় প্রায় পড়তে হচ্ছে ভোগান্তির মুখে। অনেকদিন অফিসে দেরিতে পৌছাচ্ছেন তিনি।

কালীগঞ্জ থেকে মেহেরপুর গামী এক নারী যাত্রী বলেন, তার শ্বশুর বাড়ি মেহেরপুর, তিনি পূর্বে সরাসরি বাস থাকায় সহজে যাতায়াত করতে পারতেন, হঠাৎ বাসস্টান্ডে এসে জানতে পারেন বাস বন্ধ, তিনি তার পাঁচবছর বয়সী শিশু সন্তান দুইটি বড় ব্যাগ নিয়ে এখন দুঃচিন্তায় আছে যে কিভাবে মেহেরপুর পৌঁছাবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শাপলা বসের চালক জানান, যাত্রীরা চরম দূর্ভোগের স্বীকার হচ্ছে।
মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এ দূর্ভোগ তাদের কাছে অসহনীয় হয়ে উঠছে দিন দিন। কিন্তু উপর মহলে থাকা মালিক সমিতির সিদ্ধান্তের কাছে জিম্মি যানবাহনের স্টাফ সহ যাত্রীরা। তারা দ্রুত এ সমস্যার প্রতিকার চান।
বাস বন্ধ থাকার কারন জানতে চাইলে তিনি জানান, যশোর, কালীগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গা মোটর মালিক সমিতির মধ্যে বাসের ট্রিপ সংখ্যা নিয়ে ভাগাভাগির জের ধরে বিরতিহীন ভাবে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ মোটর মালিক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দীন বলেন, চুয়াডাঙ্গা মালিক সমিতির কর্মকর্তাদের মৌখিক ভাবে বারবার বলা হয়েছে বিষয়টি সমাধান করার জন্য কিন্তু তারা কোনও আমলে নিচ্ছেন না।

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা-যশোর ভায়া জীবননগর রুটে চুয়াডাঙ্গা থেকে ৪০টি বাস চলাচল করে। এর মধ্যে খুলনা রুটের বাসও রয়েছে। ২০১৩ সালে একই রুটে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবিতে কালিগঞ্জ মোটর মালিক সমিতির বাঁধার মুখে ২০ মাস ১১ দিন সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ ছিল। ওই সময়েও হাসাদহ পর্যন্ত বাস চলাচল করতো